শিলাবৃষ্টিতে ফুটো হয়ে গেছে ঘরের চাল, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
বাংলাদেশ

শিলাবৃষ্টিতে ফুটো হয়ে গেছে ঘরের চাল, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে এক ঘণ্টার শিলাবৃষ্টিতে ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে ঝরে পড়েছে অনেক গাছের আম। পাশাপাশি বোরো ধান, মিষ্টিকুমড়া, টমেটোসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। অনেক ঘরবাড়ির চালের টিন ফুটো হয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় শিলাবৃষ্টি এবং ঝোড়ো বাতাসে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকের ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি বোরো ধান ও শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেকের।

স্থানীয়রা জানায়, খুঁটি ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বজ্রাঘাতে কৃষকের তিনটি গরু মারা গেছে। বোরো ধান, তরমুজ, ডাল ও টমোটোসহ শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

রহমতাবাদ এলাকার বাসিন্দা নুরুল হুদা জানান, শিলাবৃষ্টির সময় বজ্রাঘাতে আমার এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান, রেজাউল করিম ও আবুল হাসেমের তিনটি গরু মারা গেছে। গরুগুলো বাড়ির পাশে বাঁধা ছিল। আজ বড় আকৃতির শিলা ঝরেছে। এসব শিলার কোনও কোনোটির ওজন ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত। শিলার আঘাতে বসতঘরের চালা ফুটো হয়ে গেছে অনেক পরিবারের।

মঘাদিয়া ইউনিয়নের হাসিমনগর এলাকার কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে বিক্রির উপযোগী ২০ মণের মতো পাকা টমেটো ক্ষেতে ছিল। শিলাবৃষ্টিতে বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।’

ওয়াহেদপুর এলাকার বাসিন্দা কাঠমিস্ত্রি লিটন চন্দ্র নাথ বলেন, ‘শিলাবৃষ্টিতে অনেকের ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। সকাল থেকে ১০ জনের ঘরের টিন বদলানোর কাজ করেছি। আরও অনেকে ডাকছেন।’

এসব শিলার কোনও কোনোটির ওজন ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধান, গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি ও ডালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ৯৫০ হেক্টর জমির বোরো আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫ হেক্টর জমির ধান। ৪০ হেক্টর জমির সবজি আক্রান্ত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮ হেক্টর জমির। ৭৫০ হেক্টর জমির ডালক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে, ক্ষতি হয়েছে ৩৮ হেক্টর জমির ডাল।

মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘শুধু বৃষ্টি হলে ফসলের তেমন ক্ষতি হতো না। কিন্তু শিলাবৃষ্টির কারণে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। বৃষ্টি যদি আর না হয়, তাহলে আক্রান্ত জমির ধান ও ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না। আবারও যদি বৃষ্টি হয় তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে।’

Source link

Related posts

করোনায় মৃত্যু ১৩ হাজার ছাড়াল

News Desk

সুন্দরবনের পর্যটন স্পটে দোকান, মেলে সিগারেটও

News Desk

করোনায় মারা গেলেন অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান

News Desk

Leave a Comment