বাংলাদেশে করোনায় একদিনে নতুন মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে৷ করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বাংলাদেশে নতুন করে যে ‘কঠোর লকডাউনের’ আরোপ করা হয়েছে প্রথম দিনে ঢাকার রাস্তায় তেমন যানবাহন ও লোকজন দেখা যায়নি৷ অবশ্য কাঁচাবাজারের চিত্র ছিল আলাদা ৷
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৯৮৭ জনে। একই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ১৮৫ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৩ হাজার ১৭০ জন।
বুধবার ভোরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেল ‘কঠোর লকডাউন’ কার্যকর করার জন্য পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তৎপর রয়েছে।৷ অধিকাংশ সড়কের প্রবেশ পথই অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ তারপরও লোকজন জরুরি প্রয়োজনে ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে বের হয়েছেন৷ ঢাকার ধানমন্ডি, পান্থপথ, কারওয়ারন বাজার, বাংলামটর, শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরে লকডাউনে কিছু ব্যক্তিগত যানবাহন ও রিকশার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে৷ ঢাকার ভেতরে সিটি সার্ভিস ও ঢাকার বাইরের দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ আছে ৷ আর ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় যারা ব্যক্তিগত যানবাহনসহ নানা উপায়ে লকডাউনে ঢাকার বাইরের যাওয়ার এখনো চেষ্টা করছেন তারা বিপাকে পড়েছেন ৷‘এর মধ্যে যাদের পাস নেই তাদের জরিমানা করা হচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মোটরসাইকেলকে ছয় শ থেকে এক হাজার দুই শ টাকা, আর গাড়িকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে। বুধবার পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ হওয়ায় সরকারি ছুটি৷ রোজারও প্রথম দিন ৷ ফলে লোকজন কতটা লকডাউন মানছেন তা বুঝতে আরো দুই-এক দিন দেখতে হবে৷
গেল সপ্তাহের লকডাউনের সঙ্গে আজ বুধবারের (১৪ এপ্রিল) লকডাউনের কোনো মিলই নেই। গত নয়দিন লকডাউনে রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ দেখা গেলেও আজ মানুষ নেই বললেই চলে। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হলেই পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।
আজ বুধবারের (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডি, লালবাগ, তেজগাঁও, রমনা, কলাবাগানসহ বিভিন্ন থানা এলাকা ঘুরে অধিকাংশ রাস্তাঘাটে পুলিশের টহল ভ্যান ও সাইরেন বাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে দেখা গেছে। গতকালের (১৩ এপ্রিল) তুলনায় রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তাছাড়া রমজানের প্রথম দিন হওয়ার কারণে এমনিতেই মানুষ ঘরের বাইরে বের হননি।
রাস্তায় পুলিশের টহল গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাক, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহৃত সীমিত সংখ্যক যানবাহন ছাড়া তেমন যানবাহন চোখে পড়েনি। প্রায় প্রতিটি যানবাহনকে থামিয়ে থামিয়ে কী প্রয়োজনে কোথায় যাচ্ছেন তা জানতে চাইছেন পুলিশ সদস্যরা। অপ্রয়োজনে বাইরে বের হয়েছেন নিশ্চিত হলে মামলা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হচ্ছে।