রাজশাহী জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৫৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আরও ৩৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনসাধারণ সচেতন না হলে সংক্রমণের হার আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, বুধবার (১৬ জুন) সকাল ৯ থেকে রোববার (১৭ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজশাহীতে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় এক হাজার ৫৯১টি। এর মধ্যে আরটিপিসিআর ল্যাবে ৩৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয়েছেন ১৬৬ জন।
অন্যদিকে, রাজশাহীর নয় উপজেলায় মোট ২৮৪ জনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়। এতে শনাক্ত হন ৬৩ জন। এছাড়াও রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) থেকে ৮৮৬ জনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করে ৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আবার জিন এক্সপার্ট টেস্ট করা হয় ২৫ জনের, এতে শনাক্ত হয়েছেন ১২ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পর সেখান থেকে ভাইরাসটি রাজশাহীতে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা চরম উদ্বেগের বলে জানিয়েছেন রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার।
তিনি বলেন, বর্তমানে রাজশাহী করোনার নতুন হটস্পট। সুতরাং, বাঁচতে হলে সচেতনতার বিকল্প নেই। এজন্য সামাজিক সংক্রমণ যাতে না হয় সে বিষয়ে নিজেদের আত্মসচেতন হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে লকডাউনের বিকল্প নেই। মূলত চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইন্ডিয়ান ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট টানা কয়েক সপ্তাহের লকডাউনেই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। তাই রাজশাহীতেও এই নীতি প্রয়োগ করা বাঞ্ছনীয়। এজন্য রাজশাহীতে লকডাউন বেড়ে ১৭ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
এদিকে রামেকে করোনা টেস্টের বিষয়ে উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৭ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। অন্যদিকে, মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ৩৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১১৬ জনের শরীরে করোনার জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণের হার ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ, নাটোরে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। তবে জেলাজুড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণের হার ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
অন্যদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার শামীম ইয়াজদানি বলেন, রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আগে মোট শয্যা সংখ্যা ছিল ২৭২টি, তা বাড়িয়ে বর্তমানে ৩০৯টি করা হয়েছে। এরপরও করোনা রোগীদের বেড দেয়া যাচ্ছে না। রামেকের পক্ষ থেকে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন।