Image default
বাংলাদেশ

রংপুরে রাতের আঁধারে চলে বালু উত্তোলন, ঝুঁকির মুখে স্কুল

রংপুরের মিঠাপুকুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে উপজেলার বলদীপুকুর ব্যাপ্টিস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদের মুখেও বন্ধ করা যায়নি প্রভাবশালীদের অবৈধ বালু উত্তোলন। একই এলাকায় জায়গা পরিবর্তন করেও চলছে বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞ। ওই এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী সিন্ডিকেট করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েক বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও এখন সময় পরিবর্তন করে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছেন তারা।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের বলদীপুকুর ব্যাপ্টিস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে আবাদি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেছে রাফা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে স্থানীয়ভাবে দেখভাল করছেন আবু সাইদ ও রওশন মিয়া নামে দুই ব্যক্তি। তারা ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গভীরভাবে বালু উত্তোলন শেষ করেছেন। এখন বলদীপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ফসলি জমি থেকে পুণরায় উত্তোলন শুরু করেছেন। স্থানীয়রা বাধা দিলেও কোনো তোয়াক্কা করছেন না প্রভাবশালীরা।

অপরদিকে মোলং বাজারের পাশে হাবিবপুর গ্রামে আব্দুল হাকিম মিয়ার জমি থেকেও বালু উত্তোলন শুরু করেছেন বলদীপুকুর কোনাপাড়া গ্রামের মশিউর রহমান। সেখানে স্কেভেটর মেশিন দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন করছেন তিনি। প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেটের মুখে প্রতিবাদ করেও কাজ হচ্ছে না বলে জানান এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলদীপুকুর ব্যাপ্টিস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এখন স্থান পরিবর্তন করে বলদীপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে মমিনপুর গ্রামে ফসলি জমি তেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর ফলে বলদীপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকসহ আশপাশের বাড়িঘর ভাঙনের মুখে পড়েছে। ১০ চাকার ভারি ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।

হাবিবপুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক বলেন, মোলং বাজারের উত্তর পাশে হাবিবপুর গ্রামের কয়েকদিন ধরে শুরু হয়েছে বালু উত্তোলন। একটি প্রভাবশালী চক্র বালুগুলো উত্তোলন করছেন। প্রশাসন এ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। রাণীপুকুর বিট পুলিশিংয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, ১০ চাকার ড্রাম দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তাঘাট ভেঙে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি ট্রাকগুলো আটক করেছিলাম। কিন্তু রাণীপুকুর ভূমি কার্যালয়ের অসহযোগিতার কারণে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।

রাণীপুকুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার রায় বলেন, ইতোপূর্বে ওই স্থানে এসিল্যান্ড স্যার ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরও তারা বালু উত্তোলন করছে বলে শুনেছি। বলদীপুকুর ব্যাপ্টিস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বলদীপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে অবৈধ বালু উত্তোলকারী আবু সাইদ বলেন, প্রাইমারী বিদ্যালয়ের পাশ থেকে আর বালু উত্তোলন করা হচ্ছে না। মাঝে মাঝে বলদীপুকুর বিদ্যালয়ের পাশ হতে উত্তোলন করা হচ্ছে।

মোলং হাবিবপুর এলাকার অবৈধ বালু উত্তোলনকারী মশিউর রহমান বলেন, ওই এলাকায় আগে বালু উত্তোলন করেছিল। এর ফলে জমিটাতে ফসল চাষ হচ্ছে না, তাই বালু উত্তোলন করার জন্য স্কেভেটর মেশিন নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু এখনও শুরু হয়নি, কেবল রাস্তা ঠিক করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন ভূঁইয়া বলেন, এলাকাবাসী এ ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। স্থানীয়ভাবে তারা বাধাও দেয় না। তবে বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related posts

দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে

News Desk

প্রেমের প্রতিশোধ নিতে গৃহবধূকে একাই খুন করে ঘাতক

News Desk

ভরা মৌসুমেও সাগরে মিলছে না পর্যাপ্ত ইলিশ, দাম নাগালের বাইরে

News Desk

Leave a Comment