মুক্তির পর উচ্ছ্বসিত এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা
বাংলাদেশ

মুক্তির পর উচ্ছ্বসিত এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা

মুক্তির পর উচ্ছ্বসিত এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকরা। জাহাজে থাকা সব নাবিকদের এক সঙ্গে থাকা হাস্যোজ্জ্বল ছবি তুলে পাঠিয়েছেন স্বজনদের কাছে। 

এর আগে শনিবার (১৩ এপ্রিল) সোমালিয়ার সময় রাত ১২টা (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায়) এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ থেকে একে একে নেমে গেছেন সব দস্যু। তখন জাহাজটিতে ছিল ৬৫ জন দস্যু। তারা নেমে নৌকা নিয়ে চলে যায়।

এদিকে, নাবিকদের মুক্তির জন্য সোমালিয়ান জলদস্যুদের ডলারভর্তি ব্যাগ একটি এয়ারক্রাফট থেকে ফেলার দৃশ্যের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দস্যুরা ডলারভর্তি ব্যাগ পেয়ে খুশিতে চিৎকার করতে থাকে। এরপরই নাবিকদের মুক্তি দেওয়া হয়। 

এ সম্পর্কে কেএসআরএমের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, মুক্তিপণ হিসেবে কত টাকা এবং কীভাবে দেওয়া হয়েছে তা সিক্রেট (গোপনীয়) বিষয়। জাহাজসহ নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে যা করেছি আমরা লিগ্যাল উপায়ে করেছি। জাহাজসহ নাবিকদের সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি- এটাই আমাদের বড় পাওনা।

মুক্তির পর চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ পেয়েছে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকরা। পাশাপাশি জাহাজে রেখে যাওয়া জলদস্যুদের হাতের ছাপ, ফেলে যাওয়া কাপড় আর ব্যবহার্য সামগ্রী ইত্যাদির নমুনা সংগ্রহ করেন নৌবাহিনীর একটি টিম। এমনটাই জানিয়েছেন সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিক আতিক ইউ এ খান।

তিনি জানান, বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় নোঙর তুলে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজসহ নাবিকরা। রওনা হওয়ার পর সোমালিয়ার জলসীমা থেকে বের হতেই ভোর ৫টার দিকে ন্যাটোর দুইটা ফ্রিগেট, ইতালি আর স্পেনের দুইটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে থামায়।  

তাদের প্রায় ২৫ জন নৌসেনা জাহাজে উঠে আসেন। ফ্রিগেটের ডাক্তার এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের সব নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। ত্বকের এলার্জিসহ অন্যান্য ছোটখাটো রোগের চিকিৎসা আর মেডিসিন সরবরাহ করেন। এ সময় সব নাবিকের ছবি আর ডিএনএ স্যাম্পলও সংগ্রহ করেন তারা।

ফ্রিগেটের কমান্ডো আর ফরেনসিক ইউনিটের সদস্যরা জাহাজের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। জলদস্যুদের হাতের ছাপ, ফেলে যাওয়া কাপড় আর ব্যবহার্য সামগ্রী ইত্যাদির নমুনা সংগ্রহ করেন। এ ছাড়াও নৌসেনারা আবদুল্লাহর নাবিকদের কিছু খাদ্যসামগ্রী উপহার দেন।

জাহাজটি কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন। এসআর শিপিং সূত্র জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে প্রায় ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আছে। গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে এসব কয়লা নিয়ে যাত্রা শুরু করে জাহাজটি। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরের জলদস্যুর কবলে পড়ে জাহাজটি। অর্থাৎ ভাড়ার বিনিময়ে মোজাম্বিক থেকে দুবাইয়ের আমদানিকারকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর। 

এই প্রতিষ্ঠানটির অধীনে মোট ২৪টি জাহাজের মধ্যে সর্বশেষ যুক্ত করা জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি এই বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। ড্রাফট ১১ মিটারের কিছু বেশি। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেওয়ার আগে এটির নাম ছিল গোল্ডেন হক। মালিকানা পরিবর্তনের পর জাহাজের নামও পরিবর্তন করা হয়।

Source link

Related posts

ঝড়ে ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে খাগড়াছড়ির যোগাযোগ বন্ধ

News Desk

শাল্লায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ডুবে গেছে ৪০ হেক্টর জমির ধান 

News Desk

গরমে অতিষ্ঠ রাজশাহীর মানুষ, বাড়ছে ডায়রিয়া

News Desk

Leave a Comment