বঙ্গোপসাগরের মহিসোপানে (কন্টিনেন্টাল শেলফ) বাংলাদেশের দাবির ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে ভারত। এ ছাড়া মিয়ানমারও বাংলাদেশের দাবির বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। দুই প্রতিবেশী দেশের আপত্তি ও পর্যবেক্ষণের নিষ্পত্তির পরই ইস্যুটি সুরাহা করতে পারে কমিশন অন দ্য লিমিটস অব দ্য কন্টিনেন্টাল সেলফ (সিএলসিএস)। কিন্তু দাবি, পাল্টা দাবি, আপত্তি ও পর্যবেক্ষণের কারণে এটি একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্র জানায়, জাতিসংঘের মহিসোপান নির্ধারন সংক্রান্ত কমিশনে এই আপত্তি দিয়েছে ভারত। মহীসোপানের যতটুকু অংশ নায্য প্রাপ্য হিসেবে বাংলাদেশ দাবি করছে, সেখানে ভারতের অংশও রয়েছে বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সমকালকে বলেন, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। বাংলাদেশ একটা আবেদন করেছে, ভারত আপত্তি দিয়েছে। আবার বাংলাদেশ তার জবাব দেবে। এভাবেই একা ইস্যুর নিস্পত্তি হয়। আপত্তি-পাল্টা আপত্তি একটা রুটিন প্রক্রিয়া এবং এটাকে বড় করে দেখার কিছু নেই।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালে মহীসোপানে ন্যায্য প্রাপ্য দাবি করে জাতিসংঘে আবেদন করে বাংলাদেশ। ২০২০ সালের অক্টোবরে এই দাবির বিষয়ে সংশোধনী দেয় ঢাকা। ভারতের আপত্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভূখণ্ডের যে বেসলাইনের ওপর ভিত্তি করে মহীসোপান নির্ধারণ করেছে, সেখানে ভারতের একটি অংশও রয়েছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের ‘গ্রে এরিয়া’ সম্পর্কেও আবেদনে কোনও তথ্য দেয়নি বাংলাদেশ।’
গ্রে এরিয়া প্রায় ৯০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এমন একটি জটিল এলাকা যেখানে পানির উপরিভাগের সম্পদের মালিক ভারত, কিন্তু ওই অংশে সমুদ্র গর্ভস্থ মাটির নীচের খনিজ সম্পদের মালিক বাংলাদেশ।
অন্যদিকে মিয়ানমার বাংলাদেশের দাবির বিষয়ে একটি পর্যবেক্ষণ দিলেও এ নিয়ে কোন আপত্তি দেয়নি। দুই প্রতিবেশীর আপত্তি আর পর্যবেক্ষণে মহীসোপানে বাংলাদেশের নায্য প্রাপ্য দাবির নিষ্পত্তিতে জটিলতা কাটছে না।