ভরা মৌসুমেও সাগরে মিলছে না পর্যাপ্ত ইলিশ, দাম নাগালের বাইরে
বাংলাদেশ

ভরা মৌসুমেও সাগরে মিলছে না পর্যাপ্ত ইলিশ, দাম নাগালের বাইরে

ভরা মৌসুমেও জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না পর্যাপ্ত ইলিশ। সাগরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা। জালে মাছ কম ধরা পড়ার কারণে বাজারেও কমছে না দাম। এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়। ওজনে আরও বেশি হলে দামও বাড়ছে। দাম বেশি হওয়ায় হতদরিদ্র এবং মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে গেছে দেশের জাতীয় মাছ ইলিশ।

মৎস্য আহরণকারীদের মতে, বিগত বেশ কয়েক বছরের তুলনায় এবারই কম ইলিশ ধরা পড়েছে। তবে সামনের অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশাবাদী তারা। আগামী অক্টোবর মাসে ২২ দিনের জন্য বন্ধ হবে সাগরে ইলিশ ধরা। তাদের দাবি, এবার যাতে ২২ দিনের জন্য মাছ ধরা বন্ধ না করা হয়।

নগরীর ফিশারিঘাট গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ ফিশিংবোট তীরে নোঙর করা। কিছু বোট মাছ নিয়ে সাগর থেকে এসেছে। মাছ আহরণকারীদের দাবি, এবার পর্যাপ্ত ইলিশ জালে ধরা পড়ছে না। এ কারণে চট্টগ্রামের পাইকারি মাছ বাজার ফিশারিঘাটেও ইলিশ মাছের দাম বেশি। এখানে এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা। ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়।

চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ইলিশ খুবই কম। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৭০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা। এ ছাড়া ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়।

মো. রফিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘এখনও ইলিশের দাম কমেনি। এখন যে দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তা আমাদের মতো নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে ইলিশ মাছ বেশি করে ধরা পড়বে। তখন দাম কমে আসবে।’

চট্টগ্রাম ফিশিংবোট মালিক সমিতির সভাপতি নুর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাগরে ইলিশ আশানুরূপ ধরা পড়ছে না। অন্যান্য বছর এ সময়ে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তো। এবার মাছ ধরতে যারা সাগরে যাচ্ছেন তাদের খরচও ওঠে আসছে না। একটি ফিশিংবোটে ২০ থেকে ২২ জন কর্মচারী থাকে। যারা মাছ ধরার জন্য ১০ দিনের খাবার নিয়ে সাগরে যায়। এতে তাদের খাবারে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়। অথচ মাছ পাওয়া যাচ্ছে ৮০ হাজার কিংবা এক লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। প্রতিবারই ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা লোকসান যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি সামনের অমাবস্যা-পূর্ণিমায় ভালো পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়বে। তবে অক্টোবরে প্রতিবছর ২২ দিন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে সরকার। এবার যাতে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া না হয়, এ দাবি জানিয়ে আমরা ইতোমধ্যে মৎস্য উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। স্মারকলিপিতে নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছি।’

চট্টগ্রাম সামুদ্রিক মৎস্য অধিদফতরের সামুদ্রিক উৎপাদন কর্মকর্তা মো. এরশাদ শেখ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাগরে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়েনি এটা সত্য। এ কারণে বাজারে দামও একটু বেশি। আশা করছি, সামনের অমাবস্যা-পূর্ণিমায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।’

চট্টগ্রাম সামুদ্রিক মৎস্য অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো. খালেদ কনক বলেন, ‘প্রতিবছর অক্টোবর মাসে সাগরে ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। এবার কত তারিখ থেকে বন্ধ রাখা হবে এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

Source link

Related posts

ফরিদপুরে পুলিশ শপিং কমপ্লেক্সে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

News Desk

যাত্রীসেবার মান নিশ্চিত করে ফ্লাইট পরিচালনার পরামর্শ বিমান প্রতিমন্ত্রীর

News Desk

তথ্যমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের সাক্ষাৎ

News Desk

Leave a Comment