বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের নগরীর চৌমাথা এলাকায় ৪৪ লাখ টাকা, আধা কেজি সোনা এবং ১২ হাজার ডলারসহ পটুয়াখালীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদকে থানায় সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় প্রাইভেট কারসহ আটকের পর রাত ৮টায় তাকে থানায় নেওয়া হয়।
এ সময় প্রকৌশলী হারুন অর রশিদের সঙ্গে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান ছিলেন। হারুন পটুয়াখালী থেকে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। প্রাইভেট কারও কুষ্টিয়া থেকে ভাড়া আনা হয়।
ঘটনার সময় উপস্থিত শিক্ষার্থী মহিবুল্লাহ ও সুমন্ত জানিয়েছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বিপুল অংকের টাকা নিয়ে পালাচ্ছেন। এ ধরনের খবর থেকে সন্দেহজনক গাড়ি দেখলেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তল্লাশি চালাতে গিয়ে ওই গাড়ির পেছনের ডেকের মধ্যে টাকা ও সোনার সন্ধান পান শিক্ষার্থীরা।
বিষয়টি সেনাবাহিনীকে অবহিত করা হলে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিরাপত্তা জোরদার করে। এরপর সেনাবাহিনীর পাহারায় গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয় কোতয়ালি মডেল থানায়। সেখানে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে বসে প্রকৌশলীর গাড়ির সব ব্যাগ তল্লাশি করে টাকা ও ডলার গণনা এবং সোনা ওজন করে তা জব্দ করা হয়।
গাড়িটির চালক খোরশেদ আলম জানান, প্রকৌশলীর বাড়ি কুষ্টিয়ায়। এ কারণে পটুয়াখালীতে আসা-যাওয়া এবং তার যেকোনও ভ্রমণে তার ডাক পড়ে। বুধবার ফোন করে তাকে জানানো হয় পটুয়াখালী আসার জন্য। তিনি গাড়ি চালিয়ে পটুয়াখালী এসে মালামালসহ তাদের নিয়ে আবার কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হন। বরিশাল নগরীর চৌমাথা এলাকায় আসার পর শিক্ষার্থীরা গাড়ি তল্লাশি করে টাকা ও সোনা দেখতে পেয়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিয়ে নিয়ে আসেন।
অভিযুক্ত পটুয়াখালী গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তার শ্বশুরবাড়ির জমি বিক্রির পর স্ত্রী উত্তরাধিকার সূত্রে ওই টাকা ভাগ পেয়েছেন। কিন্তু দেশের অবস্থা ভালো না থাকায় তা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। ওই টাকা নিয়ে তিনি বাড়ি যাচ্ছিলেন। এখানে কোনও অনৈতিক কাজের টাকা নেই বলে দাবি করেন তিনি। আর যে সোনা রয়েছে তা তার স্ত্রী ব্যবহার করেন।
সেনাবাহিনীর সঙ্গে থাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুজ্জামান পলিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা গাড়ি তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকার সন্ধান পেয়ে খবর দিয়েছেন। খবর পেয়ে তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে। এরপর ওই গাড়ি কোতয়ালি মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হিসাব করে ওই পরিমাণ টাকা, ডলার ও সোনা পাওয়ার পর জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকৌশলী হারুন অর রশিদকে আটক দেখানো হয়েছে।’
এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।