বিপদসীমার কাছাকাছি যমুনার পানি: চলছে ভাঙন, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল
বাংলাদেশ

বিপদসীমার কাছাকাছি যমুনার পানি: চলছে ভাঙন, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (৩ জুলাই) বিকালে মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ৫৩ সেন্টিমিটার পানি।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কৃষকেরা অপরিপক্ব পাট গাছ কেটে নিচ্ছেন। পাশাপাশি কয়েকটি এলাকায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এসব এলাকায় ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর পানির বিপদসীমা ১৬ দশমিক ২৫ মিটার। সোমবার (১ জুলাই) থেকে যমুনায় পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। ওই দিন নদীতে পানির উচ্চতা ছিল ১৪ দশমিক ৭১ মিটার। বুধবার বিকাল ৩টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৫ দশমিক ৯২ মিটার। গত ৩ দিনে পানি এক মিটার ২১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। যমুনার পানি এখনও বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে, বাঙালি নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ নদীর বিপদসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। গত বৃহস্পতিবার এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৩ দশমিক ২৬ মিটার। বাঙালি নদীর পানি এখনও বিপদসীমার দুই মিটার ১৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে প্রবল স্রোতে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে কয়েকদিন আগে থেকে উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলতাইড় ও মানিকদাইড় গ্রামে এবং কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামে যমুনার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম সেখানে দ্রুত জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন।

এ ছাড়া যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার চালুয়াবাড়ি, কাজলা, কর্ণিবাড়ি, চন্দনবাইশা এবং বোহাইল ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার কৃষকেরা তাদের বেড়ে ওঠা অপরিপক্ব পাট গাছ কেটে নিচ্ছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘যমুনা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আমাদের অপরিপক্ব পাট গাছ কেটে নিচ্ছি। এতে আমাদের লোকসান হবে। আর কয়েকদিন পর কাটতে পারলে ভালো হতো।’

চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘গত কয়েকদিনে যমুনা নদীর ভাঙনে শিমুলতাইড় গ্রামের ৪৩টি পরিবার এবং মানিকদাইড় গ্রামের ২০টি পরিবার তাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।’

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, ‘পানি বৃদ্ধির হার দেখা বোঝা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যেই পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। উপজেলায় যমুনা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকায় দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’

Source link

Related posts

ভেঙে গেলো মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ

News Desk

১৫ বছরেও কাজে লাগানো যায়নি মৌলভীবাজারের পর্যটন সম্ভাবনা

News Desk

শতবর্ষী রেলস্টেশনটি ১৮ বছর ধরে বেহাল

News Desk

Leave a Comment