শারদীয় দুর্গোৎসবের আজ বিজয়া দশমী। পুরোহিতের পবিত্র মন্ত্রে শনিবার সকাল ১০টার দিকে দর্পন বিসর্জনে মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয়। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
তবে দশমী তিথি আজ রবিবার ভোর ৪টা ৪৩ মিনিট পর্যন্ত থাকায় গতকাল দেশাচার অনুযায়ী দেবীর যে ঘট সেটি সরানো হয়নি। আজ সকালে ঘটগুলো সরানোর পর শুরু হয় দশমী যাত্রা। হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা সিঁদুর ঘট, মোমবাতি, ঘৃত প্রদীপ, অম্রপল্লব নিয়ে দুর্গা দেবীর কাছে আর্শীবাদ কামনা করেন– তারা যেন বছরজুড়ে স্বামী-সংসার নিয়ে ভালো থাকেন। দেশের মানুষ যেন ভালো থাকে, সেই প্রার্থনা করেন।
দেবী দুর্গার বিদায়ের বেলায় ভক্তদের চোখে-মুখে ছিল বিষাদের ছাপ। তারা মলিন মুখে অশ্রুসিক্ত নয়নে কান্নায় ভেঙে পড়েন। উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দুর্গা মাকে বিদায় জানান। বিদায়ের বেলায় মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন– তিনি যেন পরিবার এবং দেশের প্রতিটি মানুষকে সুখে-শান্তিতে রাখেন।
এদিকে, বিজয়া দশমীর দিনে জগৎজননী মা দুর্গাদেবী মহিসাসুরকে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করায় বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠেছেন ভক্তরা। একদিকে বিদায়ের বেদনা অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দ, সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে ‘বিজয়া দশমী’ দিনটি উদযাপন করছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের সধবা নারীরা।
শহরের দাসপাড়া, গগন সাহারবাড়ী রোড সার্বজনীন পূজামণ্ডপে সিঁদুর খেলায় অংশ নেওয়া ঈশিতা চক্রবর্তী ও সুবর্ণা সাহা জানান, তারা বিজয়ার দিনে দেবী দুর্গা মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছেন, তিনি যেন সবাইকে ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন। পরিবারের কল্যাণ কামনার পাশাপাশি দেশের প্রতিটি মানুষ যেন সুখে-শান্তিতে থাকে সেই প্রার্থনাও করেছেন তারা। পরে তারা সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রত্যাশায় একে অপরের সিথিতে সিঁদুর পরানোর পাশাপাশি রাঙিয়ে তোলেন পুরো মুখমণ্ডল।
শহরের গগন সাহার বাড়ী পূজামণ্ডপের পুরোহিত রতন চক্রবর্তী বলেন, ‘দেবী দুর্গা অশুভ শক্তি অসুরকে পরাজিত করায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিটি ভক্তকূলে বিজয়ের আনন্দ বিরাজ করছে। অন্যদিকে, মায়ের বিদায়ের কালে প্রতিটি ভক্তের মনে বিষাদের বেদনা বিরাজ করছে। শনিবার সকালে দর্পন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। তবে দেশাচার ও চিরায়িত রীতি অনুযায়ী দশমীর আনুষ্ঠানিকতা পালন করছেন ভক্তরা। এর মধ্য দিয়ে ভক্তদের আর্শীবাদ করে দেবী দুর্গা আবারও ফিরে গেছেন কৈলাসে স্বামীগৃহে– এমনটাই বিশ্বাস সবার।’