বসতঘরের সঙ্গেই সমাহিত হলেন তারা
বাংলাদেশ

বসতঘরের সঙ্গেই সমাহিত হলেন তারা

অবুঝ দুই শিশু এবাদত (৮) ও জান্নাত (১০) বসতঘরের সঙ্গে মা-বাবা আর ছোট বোনের কবরের পাশে সবসময় বসে থাকছে। ময়মনসিংহের ত্রিশালের রায়মনি গ্রামে নিহত জাহাঙ্গীরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিন জনকে হারানো স্বজনদের কান্না আর আহাজারি কিছুতেই থামছে না। পরিবারের জায়গা-জমি না থাকায় জাহাঙ্গীর, তার স্ত্রী রত্না এবং তাদের আড়াই বছর বয়সী শিশুসন্তান জান্নাত আরার মরদেহ দাফন করা হয়েছে বাড়ির আঙিনায় বসতঘরের সঙ্গেই।

আরও খবর: ট্রাকচাপায় প্রাণ গেলো স্বামী-স্ত্রী-সন্তানের

রবিবার সকাল থেকে বাড়ির আঙিনায় কবরের পাশে জাহাঙ্গীর-রত্নার দুই শিশুসন্তান এবং মা সুফিয়া বেগমকে আহাজারি করতে দেখা গেছে। কাঁদতে কাঁদতে শোকে পাথর হয়ে গেছেন জাহাঙ্গীরের মা।

শনিবার (১৬ জুলাই) রাত ১০টার সময় জানাজা শেষে বাড়ির আঙিনায় বসতঘরের সঙ্গেই কবর দেওয়া হয় তিন জনকে।

নিহত জাহাঙ্গীরের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পারিবারিক অন্য কোনও জায়গা-জমি না থাকায় বাড়ির আঙিনায় একেবারে বসতঘরের সঙ্গে তিন জনের দাফন করা হয়। জাহাঙ্গীর আকিজ গ্রুপের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের কাজ করতেন। শ্রমিকের কাজ করে যে আয় হতো, তা দিয়েই পরিবারের ভরণ-পোষণের খরচ চলতো। জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী রত্না এবং ছোট মেয়ে মারা গেলো। এখনও তাদের পরিবারে এবাদত ও জান্নাত নামে দুই সন্তান রয়েছে। এ ছাড়া নবজাতক শিশুকন্যা তো রয়েছেই। এখন কীভাবে এই পুরো সংসার চলবে?’

সুফিয়া বলেন, ‘আমার বাবা জাহাঙ্গীর আর ফিরে আসবে না! সে তার স্মৃতিচিহ্ন কন্যাশিশুকে রেখে গেছে। তার ছোট্ট সন্তানকে হাজার কষ্ট হলেও আমি লালন-পালন করবো। তার মুখের দিকে তাকালেই আমি আমার জাহাঙ্গীরকে দেখতে পাবো।’

আরও খবর: ট্রাকচাপায় গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসা নবজাতক আইসিইউতে

এদিকে রবিবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার মানুষ রায়মনি গ্রামে নিহত জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ভিড় করছে। স্থানীয় মঠবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রায়মনি গ্রাম তথা ত্রিশাল উপজেলার জন্য একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না কেউ। বিশেষ করে দুর্ঘটনার সময় মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসা নবজাতক শিশুর জন্য সবাই দোয়া করছে। শিশুটি যেন বেঁচে থাকে এবং মানুষের মতো মানুষ হয়, এটাই সবার প্রত্যাশা।’

উল্লেখ্য, শনিবার বেলা আড়াইটায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালে দরিরামপুর এলাকায় ট্রাকচাপায় একই পরিবারের ত্রিশালের রায়মনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রত্না বেগম এবং তাদের আড়াই বছরের শিশু কন্যা মারা যায়। দুর্ঘটনার সময় আঘাতে রত্না বেগমের গর্ভ থেকে বের হয়ে আসে মেয়েসন্তান। নবজাতককে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিশুটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক।

Source link

Related posts

বগুড়া করোনায় মারা গেলেন আরও ১২ জন

News Desk

ছেলে বীরকে নিয়ে নায়িকা বুবলীর স্ট্যাটাস ভাইরাল

News Desk

বিমানবন্দরে‘এয়ারপোর্ট রেস্টুরেন্ট’থেকে ২০০ মরা মুরগিসহ আটক ৭

News Desk

Leave a Comment