কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর নবীন অফিসার লেফটেন্যান্ট মো. বায়েজিদ বোস্তামী এক অনন্য অবদান রেখেছেন। গত ২২ আগস্ট বুড়িচং উপজেলায় বন্যার্তদের উদ্ধার কাজে নিয়োজিত হন তিনি। এখন পর্যন্ত ৩৫০ এর বেশি বন্যার্তকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে এসেছেন এই তরুণ। তাদের মধ্যে অনেক শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং বয়োজ্যেষ্ঠও রয়েছেন।
নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার সন্তান লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ ২০২০ সালে রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ৮৬তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে ২০২২ সালে তার বাবা মো. কামাল হোসেন (পরিদর্শক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, আটপাড়া) মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার ছেলেকে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার হয়ে দেশ সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার উপদেশ দেন।
বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বায়েজিদ সেনাবাহিনীর কঠোর প্রশিক্ষণ সফলতার সঙ্গে সমাপ্ত করেন। বাল্যকাল থেকেই দক্ষ সাঁতারু বায়েজিদ প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সাঁতারের উচ্চতর প্রশিক্ষণ ‘ফ্রগম্যান কোর্স’ সম্পন্ন করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদ্য কমিশন প্রাপ্ত এই অফিসার গত ২০ জুন কুমিল্লা সেনানিবাসে অবস্থিত একটি পদাতিক ব্যাটালিয়নে যোগদান করেন। এরপর তিনি বুড়িচং উপজেলায় বন্যার্তদের উদ্ধারকার্যে নিয়োজিত হন। এ সময় ইউনিট অধিনায়ক তাকে সাঁতারের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশের প্রয়োজনে এগিয়ে আসার নির্দেশ দেন। বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও ইউনিট অধিনায়কের নির্দেশে দেশপ্রেমিক তরুণ লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ বন্যায় আটকে পড়া মানুষের উদ্ধারে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এখন অনেকের প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন তিনি।