Image default
বাংলাদেশ

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলারসহ ২০ জেলে নিখোঁজ

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে গত ১৫ দিন ধরে ভোলার মনপুরার এফবি রিনা-১ নামে একটি ট্রলারসহ ২০ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। তবে নিখোঁজ ট্রলারটির পাশে থাকা মাছ ধরার মনপুরার অন্য ট্রলারের জেলেরা দাবি করছেন, ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায়। এত দিনেও নিখোঁজ জেলেদেরে কোনও সন্ধান না পাওয়ায় জেলে পরিবারের চলছে শোকের মাতম।

রবিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন মনপুরা থানার ওসি জহিরুল ইসলাম, দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান অলি উল্লা কাজল ও এফবি রিনা-১ ট্রলারের মালিক আক্তার হোসেন।

এদিকে নিখোঁজ জেলে শেখ ফরিদের স্ত্রী কুলসুম বেগম অভিযোগ করে জানান, ট্রলার মালিকপক্ষ জোর করে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সাগরে মাছ ধরতে পাঠিয়ে জেলেদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।

অপরদিকে ট্রলার মালিক আক্তার হোসেন উল্টো অভিযোগ করে জানান, জেলেরা না জানিয়ে রাতের আঁধারে ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকালে এ ব্যাপারে তিনি মনপুরা থানায় জিডি করেছেন।

ট্রলার মালিক আরও জানান, ট্রলারসহ নিখোঁজ জেলেদের অনুসন্ধানে তার ভাই মনির ও আবুল পৃথক দুটি ট্রলার নিয়ে গত দশ দিন ধরে সাগরে অভিযান চালায়। কিন্তু নিখোঁজ জেলেসহ ট্রলারের কোনও হদিস না পেয়ে গত শুক্রবার মনপুরার জনতা ঘাটে তারা ফিরে আসে।

এফবি রিনা-১ ট্রলারে থাকা নিখোঁজ ২০ জেলে হলেন মো. জাহাঙ্গীর (৪০), শেখ ফরিদ (৫৫), ছিদ্দিক (৪৫), শামীম (২৩), আলাউদ্দিন (৫৬), আবুল খায়ের (৬৫), বাতেন (৪০), ইয়াছিন (৩৫), জয়নাল আবেদিন (৭০), মিলন (৩৫), ইসলাম আলী (৫৫), ফিরোজ (৪৫), সোহাগ (৪৫), অলিউদ্দিন (৪১), সোহাগ আখন (৩৬), সুমন (৩০), আবুল কালাম (৬৪), আজাদ (৩৫), ইয়াকুব আলী (৬০) ও নুর সর্দার (৫৫)। এদের সবার বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২২ অক্টোবর রাতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মনপুরার জনতা ঘাট হতে রাতের আঁধারে অন্যান্য ট্রলারের সঙ্গে এফবি রিনা-১ ট্রলারের ২০ জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করতে যায়। মনপুরার অন্যান্য ট্রলারের পাশাপাশি দূরত্বে বঙ্গোপসাগরের ড্রাম বয়া নামক স্থানে ট্রলারসহ নিখোঁজ জেলেরা জাল ফেলে মাছ শিকার করছিল। ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে সাগর উত্তাল হতে থাকে। ২৫ অক্টোবর সাগরে ফেলা জাল দ্রুত তুলে মনপুরার অন্যান্য ট্রলার ফিরে আসলেও নিখোঁজ এফবি রিনা-১ ট্রলারটি আসেনি। পরে ২৬ অক্টোবর ট্রলারটি জনতা ঘাটে ফিরে না আসায় মালিক তার দুই ভাই আবুল ও মনিরকে পৃথক দুটি ট্রলার নিয়ে সাগরে নিখোঁজ জেলেদের খোঁজ করতে পাঠায়। কিন্তু দশ দিন খোঁজ করার পরও নিখোঁজ ট্রলারসহ জেলেদের কোনও হদিস না পাওয়ায় ট্রলার দুটি মনপুরায় ফিরে আসে। পরে ট্রলার মালিক ৩ নভেম্বর বিকালে থানায় জিডি করেন।

থানায় মালিকপক্ষের জিডি

সাগরে নিখোঁজ ট্রলারের পাশাপাশি দূরত্বে মাছ শিকার করা অপর ট্রলারের মাঝি শিপন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর ঢেউয়ে উত্তাল হলে নিখোঁজ ট্রলারের জেলেরাসহ আমার ট্রলারে থাকা জেলেরা দ্রুত জাল তুলে ফেলি। পরে মনপুরার দিকে রওনা করি। কিছুক্ষণ পরে নিখোঁজ ট্রলারটি আর দেখা যায়নি।’ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ট্রলারটি সাগরে ডুবে গেছে বলে মনে করছেন তিনি।

এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলার ৪ নম্বর দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলি উল্লা কাজল বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে এফবি রিনা-১ ট্রলারসহ ২০ জেলে নিখোঁজ থাকায় পরিবারের সদস্যরা আহাজারি করছে। নিখোঁজ জেলে পরিবারের সদস্যদের বাড়ি গিয়ে সান্ত্বনা দিয়ে এসেছি।’

মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ট্রলারসহ নিখোঁজ জেলেদের ব্যাপারে থানায় জিডি করেছেন ট্রলার মালিক আক্তার হোসেন। নিখোঁজ জেলেদের খোঁজ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে।

Source link

Related posts

সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে

News Desk

কিছু দুষ্ট লোক চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অতিরঞ্জিত কথা বলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

News Desk

মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি গণহত্যাকে স্বীকৃতির প্রস্তাব মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে

News Desk

Leave a Comment