বগুড়া সদর থানা, পুলিশ ফাঁড়ি ও ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট
বাংলাদেশ

বগুড়া সদর থানা, পুলিশ ফাঁড়ি ও ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে সোমবার রাতে বগুড়া সদর থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটপাট করা হয়েছে। আগুনে থানা চত্বরে থাকা সাতটি যানবাহন পুড়ে গেছে। লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জব্দ করে থানায় রাখা কয়েকটি মোটরসাইকেল। পাশাপাশি সদর জেলা ভূমি অফিস, পুলিশ ফাঁড়ি, পুলিশ প্লাজা, পুলিশ কোয়ার্টার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এগিয়ে না আসায় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) বিকাল পর্যন্ত থানা ভবনের নিচতলা ও দোতলায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। হামলার সময় পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করা হয়েছে। আপাতত থানার কার্যক্রম বন্ধ আছে। তবে থানা থেকে অনেক অস্ত্র লুট করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সদর থানা থেকে কী পরিমাণ অস্ত্র লুটপাট হয়েছে, তার হিসাব এখনও করা সম্ভব হয়নি।’

এদিকে, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার খবরে মঙ্গলবার দুপুরে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা শহরে মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিল করেছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা শহরের নবাববাড়ি সড়কের দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন।

সোমবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সদর থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, পুলিশ প্লাজা, পুলিশ কোয়ার্টার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। রাতে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে শহরের বড়গোলায় সদর উপজেলা ভূমি অফিসে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে অফিসের মূল্যবান কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। শহরের নবাববাড়ি সড়কে পুলিশ প্লাজায় হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হয়। শুধু টাইম জোন থেকে অন্তত পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের বিপুল সংখ্যক ঘড়ি নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, হামলাকারীরা সদর পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে হামলা ও লুটপাট শেষে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘণ্টাব্যাপী শতাধিক দোকানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সদর থানায় কয়েক দফা হামলার সময় পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছিল। পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার জন্য একত্র হয়ে কয়েকটি গাড়িতে সেনাসদস্যদের পাহারায় পুলিশ লাইনসে যান। এ সময় হামলাকারীদের বাধার মুখে পড়েন। তখন
পুলিশ রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের সরিয়ে দেয়।

এ ছাড়া সোনাতলা, কাহালু ও দুপচাঁচিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট এবং আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সেইসঙ্গে বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

বগুড়ার পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, ‘সদর থানায় আগুন দেওয়ার আগেই পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে কী পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র লুটপাট হয়েছে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত তার হিসাব করা সম্ভব হয়নি। সদর থানার কার্যক্রম বন্ধ আছে। আহত পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আপাতত জেলার সব পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।’

 

Source link

Related posts

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি হাজারও মানুষ

News Desk

অভিনেতা মাসুম আজিজ আর নেই

News Desk

মিতু হত্যার ৮ বছর: দায়ীদের সাজা দেখার আকুতি মা-বাবার

News Desk

Leave a Comment