প্রেমিকার ‘আপত্তিকর’ ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া এবং পরিবারের কাছে চাঁদা দাবির মামলায় রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে শের-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। আদালত মোট সাত জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর এ রায় দিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের নাম ইমরান শেখ ওরফে ইমন (২৭)। নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বিলগোপালহাটি গ্রামে তার বাড়ি। বাবার নাম আবদুল খালেক। ২০১৯ সালে যখন মামলাটি দায়ের হয়, তখন ইমরান ঢাকার শের-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার এক তরুণীর সঙ্গে ইমরানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে ইমরানের আচরণ ভালো না লাগার কারণে ওই তরুণী যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইমরান ওই তরুণীর ছবি এডিট করে ছড়াতে শুরু করেন। ওই তরুণীর বান্ধবীসহ বিভিন্নজনের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তিনি আপত্তিকর সেসব ছবি ছড়াতে থাকেন। পরবর্তীতে ওই তরুণীর মাকে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা না দেওয়ায় তিনি আরও বেশি ছবি ছড়াতে থাকেন। এ নিয়ে ওই তরুণীর বাবা চাঁদা দাবি ও ছবি ছড়ানোর অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই ইমরানের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, আদালত একটি ধারায় আসামিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং তিন লাখ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্য আরেকটি ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানার এ অর্থ অনাদায়ে আরও বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে আসামিকে। একটি সাজা কার্যকরের পর অন্যটি কার্যকর হবে। আর জরিমানার টাকা ভুক্তভোগী তরুণী পাবে বলেও আদালত রায়ে উল্লেখ করা হয়।