প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি। মঙ্গলবার (২১ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিনি সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে আরও উন্নত ও বৈচিত্র্যময় করার জন্য রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলির প্রতিশ্রুতি এবং প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত পরিদর্শনকালে তিনি স্বেচ্ছাসেবক, দলীয় কর্মী এবং সরকারি সংস্থা যারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের উদ্ধারে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেছেন।

ইইউ রাষ্ট্রদূত প্রধানত মৌসুমি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট এই ধরনের মৌসুমি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি ও সহনশীলতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা জানান, তার সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশের দক্ষিণে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং উত্তরাঞ্চলে বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নদীমাতৃক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নদী ভাঙন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। সেই লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ সহ তার দৃষ্টিভঙ্গি সংক্ষেপে বর্ণনা করেন।

গত সাড়ে ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ অবশেষে ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণ লাভ করবে।

ইইউ দেশগুলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য এ বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা এভরিথিং-বাট-আর্মস (ইবিএ) ইনিশিয়েটিভ আকারে ইইউ-এর অব্যাহত বাণিজ্য অগ্রাধিকারের প্রশংসা করেন। তিনি বাণিজ্য-সম্পর্কিত বিষয়ে ইইউ-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য তার সরকারের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

এ প্রসঙ্গে, রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সবুজ গার্মেন্টস শিল্পের প্রশংসা করেন এবং এলডিসি থেকে বাংলাদেশের সাবলীল উত্তরণ কামনা করেন। তিনি আশ্বাস দেন, ইইউর নতুন জিএসপি রেগুলেশন ইতোমধ্যে ২০২৯ সাল পর্যন্ত জিএসপি+ সুবিধার জন্য বাংলাদেশের বিষয়টি বিবেচনা করেছে।

শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তিনি ২০২৯ সালের পরেও ইইউ- এর অব্যাহত সমর্থন পাওয়ার জন্য আশাবাদী।

পদ্মা সেতু নিয়ে আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, উদ্বোধনের পর এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিঃসন্দেহে খুব বেশি হবে। কারণ এই জেলাগুলো ব্যাপক শিল্পায়নের কেন্দ্র হয়ে ওঠবে, যার জন্য আরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বন্দর সুবিধা নির্মাণের প্রয়োজন হবে।

এ লক্ষ্যে, ইইউ প্রতিনিধিদল প্রধান অন্যান্য দেশের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশের কর ব্যবস্থার প্রশংসা করেন।

Related posts

সেতু এড়িয়ে চলতে পদ্মার ফেরিঘাট স্থানান্তরের চিন্তা

News Desk

বন্দরের রাখা কনটেইনারে আগুন, ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচল বন্দর

News Desk

মোবাইল গেমসে আসক্তি, প্রাণ গেলো কিশোরের

News Desk

Leave a Comment