যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ তার নির্বাচনি পথসভায় বলেছেন, ‘দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। কেননা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে পৃথিবীতে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ২০০৯ সালে যখন তিনি দায়িত্ব নেন তখন আমাদের যে মাথাপিছু আয় ছিল, এখন তার চার গুণেরও বেশি। সেই সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল তিন হাজার মেগাওয়াট। যা এখন ২৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। এখন সকল কাজ সেটা কৃষিতে সেচ বলি আর শিল্পায়ন বা উৎপাদন বলি—সব কিছুই এখন বিদ্যুতের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে।’
সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকালে যশোর সদরের নওয়াপাড়া ইউনিয়নের শেখহাটি হাইকোর্ট মোড়ে আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
যারা দলীয় সিদ্ধান্ত মানে না তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই মার্কা, সেটি হচ্ছে নৌকা। নৌকা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর মার্কা, জননেত্রী শেখ হাসিনার মার্কা, মুক্তিযুদ্ধের মার্কা, উন্নয়নের মার্কা। সে কারণে অন্য কোনও দিকে না তাকিয়ে আগামী চার দিন আমাদের সকাল-বিকাল মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে, নৌকার কারণেই দেশের উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে। তাই আর কোনও মার্কা নেই, ৭ জানুয়ারি সকালে আমাদের সকলকে একসঙ্গে নৌকায় ভোট দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষম উন্নয়নে বিশ্বাসী উল্লেখ করে কাজী নাবিল বলেন, ‘এই সময়কালে তিনি বিধবা ভাতা, দুস্থ ভাতা, বয়স্কভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিএফ কার্ডসহ নানারকম ভাতার ব্যবস্থা করে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করে দিয়েছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি করেছেন, তাদের জন্যে বীর নিবাস তৈরি করে দিয়েছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্প করেছেন, যেন মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যা ও দারিদ্র্য দূর হয়।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, ক্ষুদ্র সব ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করি। আমরা সকলে প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের সপক্ষে ভোটারদের সচেতন করি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু এবং উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। এই নির্বাচনে সকলেই অংশগ্রহণ করবে।’
দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করার লক্ষ্যে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন সারা দেশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করছি, তখন বিএনপি-জামায়াত দেশব্যাপী নাশকতা করছে। তারা রেললাইন উপড়ে ফেলছে, বাসে আগুন দিচ্ছে, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারছে, সরকারি অফিসগুলোয় আগুন দিচ্ছে। ২০০১-২০০৬ সময়কালে তারা সিরিজ বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, রাজনৈতিক দলের নেতাদের হত্যা করে। এটাই ছিল তাদের রাজনীতি।’
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে যেমন উন্নয়ন করেছেন, তেমনই যশোরেও নানা উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করেছেন। তিনি যশোরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর মেডিক্যাল কলেজ, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার আইটি পার্ক তৈরি করে দিয়েছেন। সারা দেশের মেগা প্রকল্পের মধ্যে তিনি যশোরবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দিয়েছেন।’
নির্বাচনী এই পথসভায় সভাপতিত্ব করেন নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান।
অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, সাবেক সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত) আলেয়া আফরোজ, সহসভাপতি মেহেদি হাসান মিন্টু, জেলা যুবলীগের সভাপতি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আসাদুজামান মিঠু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মীর জহিরুল ইসলাম, ইউনিয়ন নির্বাচন কমিটির সদস্যসচিব ওসমান গণি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি গৌতম কর্মকার, যুবলীগ নেতা মঈনউদ্দিন মিঠু প্রমুখ।
এর আগে, দুপুরে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ যশোর শহরের বেজপাড়া তালতলা এবং পুরাতন কসবা পালবাড়ি মোড় এলাকায় গণসংযোগ করেন।