প্রধানমন্ত্রীর ওপর দেশের মানুষের আস্থা আছে: কাজী নাবিল এমপি
বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর ওপর দেশের মানুষের আস্থা আছে: কাজী নাবিল এমপি

যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর দেশের মানুষের আস্থা আছে। তার যোগ্য নেতৃত্বগুণে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে হবে।’ তিনি যশোর সদরসহ জেলার ছয়টি আসনে নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

শনিবার (১১ নভেম্বর) বিকালে যশোর সদরের শাহবাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কাজী নাবিল আহমেদ এসব কথা বলেন।

এর আগে, তিনি শাহবাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত তিনতলা ভবনের উদ্বোধন করেন।

হৈবতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন সভাপতি শামসুল হক বিশ্বাস।

কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘আপনারা লক্ষ করেছেন ইতোমধ্যে নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াত দেশব্যাপী নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু এ দেশের মানুষের আস্থা রয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচন অবাধ ‍ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই নির্বাচনে অংশ নেবে। উৎসবমুখর পরিবেশেই ভোট গ্রহণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা এই দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের কথা চিন্তা করেন। সেই কারণে তাদের কল্যাণে তিনি দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন। আজ দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। গ্রাম-শহরের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে। পদ্মা সেতু ছিল এই অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের জন্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দিয়েছেন। যার সুফল এ অঞ্চলের মানুষ এখন পাচ্ছে। পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরু হয়েছে যা এই সরকারের অবদান। কয়েক দিন আগে জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করেছেন। মানুষের কল্যাণেই তিনি একের পর এক মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করে চলেছেন।’

দেশব্যাপী বিএনপি -জামায়াতের হরতাল, অবরোধ ও নৈরাজ্যের বিষয় উল্লেখ করে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত দেশে আবারও নাশকতা শুরু করেছে। তারা দেশের ভেতরে ও বাইরে সর্বত্র ষড়যন্ত্র করছে। কারণ তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানে না। জনগণ ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের নারকীয় কর্মকাণ্ড ভোলেনি, ভোলা যায় না। দেশব্যাপী সিরিজ বোমা, গ্রেনেড হামলা, বাংলা ভাইয়ের উত্থান, বিদ্যুৎ চাইতে গিয়ে গুলি, সার চাইতে গিয়ে ১৮ কৃষকের মৃত্যুর কথা দেশবাসী ভুলতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্বে পরিণত করে। তাদের আমলে দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সিরিজ বোমা হামলা হয় গোটা দেশে, গ্রেনেড হামলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ওই সময় আমরা হারাই আমাদের নেত্রী আইভি রহমানসহ কয়েক নেতানেত্রীকে। বোমা হামলা করে তারা অর্থমন্ত্রী শাহ এমএস কিবরিয়া, আহছানউল্লাহ মাস্টার এমপিসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলের নেতাকর্মী, রাজনীতিকদের হত্যা করে। তাদের আমলে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। জন্ম হয় বাংলাভাইদের।’

কাজী নাবিল বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করতে তারা প্রায় তিন হাজার সরকারি অফিসে আগুন দিয়েছিল। চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। ঘুমন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। ট্রেনলাইন উপড়ে ফেলেছিল, গাছ কেটে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছিল। তাদের সেসব নাশকতা দেশবাসী কখনও ভুলবে না।’

শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছি। শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ নানা উন্নয়নের কারণে সারা বিশ্বে আমরা এখন রোল মডেল। বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই অভূতপূর্ব উন্নয়নের গল্প শুনতে চান।’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে আমাদের জিডিপি ছিল মাত্র ৬০ মিলিয়ন ডলার, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬০ মিলিয়ন ডলারে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল তিন হাজার মেগাওয়াট, যা বর্তমানে ২৫ হাজার মেগাওয়াট। আমাদের মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে অনেক। এগুলো সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণে। শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা সব সময় ভাবেন এবং তাদের জন্য কাজ করেন। সে কারণে তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা জীবনবাজি রেখে লড়াই করেছেন, তাদের ভাতা বাড়িয়েছেন। বিধবা, বয়স্ক, শিক্ষা উপবৃত্তি এমন দেড় শতাধিক ভাতা চালু করেছেন, যাতে দেশের মানুষ একটু ভালো থাকতে পারে।’

শাহবাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ

নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আমাদের জনগণের পাশে থাকতে হবে। প্রত্যেক নেতাকর্মীকে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। তাদের এই সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বোঝাতে হবে।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আফজাল হোসেন, লুৎ-ফুল কবির বিজুসহ দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

শান্তি সমাবেশের আগে বিকালে কাজী নাবিল আহমেদ যশোর সদরের হৈবতপুর ইউনিয়নের মাজদিয়া থেকে কাউদিয়া, নাটুয়াপাড়া ঈদগাহ থেকে ভাগলপুর এবং ভাগলপুর থেকে রসুলপুরের পাকা রাস্তার নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।

Source link

Related posts

গাইবান্ধায় ‘জাতীয় বাজেট: আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠী’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

News Desk

এক জেলার ২৯টি স্লুইসগেট অকেজো

News Desk

রাজৈরে ‘কুম্ভমেলা’ শুরু

News Desk

Leave a Comment