পটুয়াখালীতে প্রস্তুত ১৭৭ আশ্রয়কেন্দ্র, সতর্ক থাকতে মাইকিং
বাংলাদেশ

পটুয়াখালীতে প্রস্তুত ১৭৭ আশ্রয়কেন্দ্র, সতর্ক থাকতে মাইকিং

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ক্রমেই উপকূলের দিকে আসছে। নিম্নচাপটি যেকোনো সময় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে পটুয়াখালী উপকূলে আঘাত হানার কথা বলা হচ্ছে। এ অবস্থায় সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় কলাপাড়া উপজেলায় ১৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) বেলা ১১টায় উপজেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এ তথ্য জানানো হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, সিপিপির উপপরিচালক আছাদ উজ জামান, উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও জনপ্রতিনিধিরা।

উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় উপজেলায় ১৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২০টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শিশুখাদ্য ও শুকনো খাবার মজুত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া কুয়াকাটার বহুতল ভবনগুলো দুর্যোগের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। দুর্যোগে করণীয় সম্পর্কে প্রচার ও মানুষকে সচেতন করতে তিন হাজার ১৬০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

এদিকে, জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ ও নৌযান সমূহকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে নিজামপুর কোস্টগার্ড। সকাল ৯টায় মৎস্য বন্দর আলীপুরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করেন কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এ সময় তারা খাপড়াভাঙা নদীতে অবস্থানরত ট্রলারসমূহে থাকা জেলেদের ঘূর্ণিঝড়ের সময় করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা দেন।

নিজামপুর কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্ট কমান্ডার আবু রাশেদ সুমন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল থেকেই জনসচেনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছি আমরা। সমুদ্রে আমাদের টিম কাজ করে যাচ্ছে। তবে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকায় তীরে রয়েছে অধিকাংশ ট্রলার। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি আমরা।’

ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সর্বশেষ ৬ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে একই এলাকায় আছে। এটি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করেছিল। আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। নিম্নচাপের কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এ অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

পটুয়াখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গভীর নিম্মচাপটি আরও ঘনীভূত হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই পায়রা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সব মাছধরা ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হলো।’

Source link

Related posts

সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে

News Desk

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ সময় আটকে থাকার শঙ্কা

News Desk

ভূমি জটিলতায় আটকে আছে শেখ রাসেল স্টেডিয়াম নির্মাণ

News Desk

Leave a Comment