নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী টায়ার্স কারখানায় আগুন লাগা ভবনটির তিনটি ফ্লোর ধসে পড়েছে। ড্রোন ক্যামেরা ও মই দিয়ে ধসে পড়া ফ্লোরে কোনও মরদেহের আলামত দেখতে পায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি।
বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকালে পুড়ে যাওয়া ভবনটি পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের ড্রোন ও মই দিয়ে কর্মকর্তারা ভবনে দেখেছেন, কোনও ডেডবডি (মরদেহ) তারা দেখেননি। এ ছাড়া এখানে অনেক বেশি কেমিকেল পুড়েছে, মরদেহ থেকে থাকলেও ওইভাবে পাওয়ার সম্ভবনা নেই। কারণ টানা ২১-২২ ঘণ্টা টানা আগুন জ্বলেছে। অথচ ৩-৪ ঘণ্টা আগুনে পুড়লে একটা মানুষ পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়ার কথা। সে হিসেবে আমরা এখনও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না ভবনের ভেতরে ঠিক কতগুলো ডেডবডি রয়েছে।’
ভবনের তিনটি ফ্লোর ধসে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা ড্রোন (ক্যামেরা) দিয়ে ভেতরে দেখেছেন ৪, ৫ ও ৬ তলার ফ্লোর ধসে পড়েছে। সেখানে এখনও আগুন রয়েছে। সুতরাং আজ উদ্ধার অভিযান শুরু করা সম্ভব না। ভবনের বিষয়ে টেকনিক্যাল পারসনরা সিদ্ধান্ত দেবেন। তারা কী ভেতরে প্রবেশ করে অভিযান চালাতে পারবে কি না? তারা না পারলে ঢাকা থেকে জাতীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা এসে কাজ শুরু করবেন।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু অনুপ্রবেশকারী গত ২৫ আগস্ট এখানে এসেছে। তাদের বেশকিছু লোকজন বিভিন্ন তলায় ছড়িয়ে পড়ে। রাতে নিচতলায় আগুন দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির লোকজনদের নিয়ে পরিদর্শনে আসলাম। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’
এর আগে, মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়।
প্রসঙ্গত, রবিবার (২৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টায় রূপগঞ্জের রূপসীতে গাজী টায়ার্স কারখানায় আগুন লাগে। পরে দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা পর সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ভোর ৫টায় আগুন নেভানোর কথা জানালেও বিকেল থেকে ফের ভবনটিতে আগুন জ্বলে ওঠে। সন্ধ্যার পর রাতে আগুনের তীব্রতা বাড়ে।