নোয়াখালীর চাটখিলে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসে দিঘিতে সাঁতার কাটতে নেমে মারা যাওয়া উপ-করকমিশনার ওমর ফারুক মাসুমের (৩৫) মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। পুলিশ বলছে, এর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এর আগে, বুধবার (৪ মে) চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মল্লিকা দিঘিতে সাঁতার কাটতে নামলে তিনি নিখোঁজ হন। বিকালে তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ওমর ফারুক মাসুম উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি ৩১তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী করকমিশনার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। সর্বশেষ ঢাকার কর অঞ্চল–১৩ তে উপ-করকমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তারা তিন ভাই ও তিন বোন। তিন ভাইয়ের মধ্যে ওমর ফারুক মেজো। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। তারা চট্টগ্রামে থাকেন। ঈদের পর দিন তিনি বন্ধুদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে চার বন্ধু মিলে মল্লিকা দিঘিতে সাঁতার কাটতে নামেন। চার জনই সাঁতার কেটে দিঘির মাঝখানে যান। এরপর তিন বন্ধু তীরে ফিরে এলেও ওমর ফারুক আসেননি। পরে আশপাশের লোকজন তাকে খুঁজতে দিঘিতে নামেন। কিন্তু তার কোনও সন্ধান না পাওয়ায় বেলা সাড়ে ৩টায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। বিকাল সোয়া ৫টায় ডুবুরি দল তাকে উদ্ধার করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে না।’
তার ভগ্নিপতি আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আজ সকালে ছয় বন্ধুকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এসেছে। দুপুরে তিন বন্ধুকে নিয়ে মল্লিকা দিঘিতে গোসল করতে যায়। দিঘিতে নেমে সাঁতার কেটে মাঝামাঝি গিয়ে তিন বন্ধু ফিরে এলেও সে আসেনি। বিকালে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল লাশ উদ্ধার করে।’
চাটখিল থানার ওসি মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘সাঁতার কাটতে নেমেই নিখোঁজ হন। পরে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।’
উপ-করকমিশনার নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে ছুটে যান নোয়াখালী-১ আসনের (চাটখিল ও সোনাইমুড়ী আংশিক)
সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম। এ সময় সরকারি কর্মকর্তার নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে আত্মীয়স্বজনসহ আশপাশের হাজারো মানুষ দিঘির পাড়ে ভিড় জমান।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য উপ-করকমিশনার ওমর ফারুক মাসুমের লাশ হাসপাতালে আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’