তিন দিনের ছুটিতে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পর্যটকের ঢল
বাংলাদেশ

তিন দিনের ছুটিতে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পর্যটকের ঢল

তিন দিনের সরকারি ছুটিকে ঘিরে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে সৈকতে হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটেছে। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনেও কমতি নেই। মধু পূর্ণিমার প্রভাবে সমুদ্রে বড় বড় ঢেউ আর ঢেউয়ের গর্জন উপভোগ করছেন হাজারো পর্যটক ও দর্শনার্থীরা।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত থেকে ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি প্রচুর বৃষ্টি উপেক্ষা করে পর্যটকরা সমুদ্রে গোসল ও হইহুল্লোড়ে মেতে ওঠে। আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে শতভাগ বুকিং রয়েছে।

আগত পর্যটকরা লেম্বুর বন, শুঁটকি পল্লী, ঝাউবন, গঙ্গামতির চর ও বৌদ্ধ বিহারসহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউবা ঘুরছেন ঘোড়া কিংবা ওয়াটার বাইকে। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন সমুদ্রের তীরের আছড়ে পড়া বড় বড় ঢেউ। বর্তমানে সৈকতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন স্পটে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ। খাবার হোটেল থেকে শুরু করে ঝিনুক মার্কেট সবখানেই ভিড় দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত প্রায় দেড়শ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

ফরিদপুর থেকে আগত পর্যটক মিজানুর রহমান খোকন বলেন, ‘আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র স্থান কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। এখানে আসলে মন জুড়িয়ে যায়। সমুদ্রের ঢেউ আর ঢেউয়ের গর্জন উপভোগ করছি। যে অনুভূতি কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় কম সময়ে কোনও ঝামেলা ছাড়াই কুয়াকাটা আসতে পেরে খুবই আনন্দিত।’

ঢাকা থেকে আগত পর্যটক দম্পতি ইয়ামনি-রিয়াদ জানান, তিন দিনের ছুটিতে তারা কুয়াকাটা ভ্রমণে এসেছেন। সমুদ্রে গোসলসহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়িয়েছেন। খুব ভালো লেগেছে।

তবে আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট মালিকরা রুম ভাড়ার ওপর পর্যটন দিবস উপলক্ষে ৪০-৫০ ভাগ ছাড়ের ঘোষণা দিলেও বাস্তবে হয়েছে তার উল্টোটা। অতিরিক্ত ভিড়কে পুঁজি করে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও দুই থেকে তিন গুণ বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন পর্যটকরা। খাবার হোটেলগুলোতেও নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত দাম।

অনেক পর্যটক তিন দিনের বুকিং দিয়ে আসার পরেও একদিনের জন্য রুম পেয়েছেন। বেশি ভাড়া আদায়ের লক্ষ্যে হোটেল কর্তৃপক্ষ বুকিং বাতিল করেছে বলে অভিযোগ তাদের। জেলা প্রশাসন এবং বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির তদারকি না থাকায় এমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকই।

নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা

এ বিষয়ে কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমএ মোতালেব শরীফ বলেন, ‘প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির আবাসিক হোটেলগুলোর বেশিরভাগই আগাম বুকিং হয়েছে। তাদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সুযোগ নেই। কেউ যদি নিয়ে থাকে সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। তবে পর্যটকসেবা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ দিতে প্রস্তুত রয়েছে হোটেলগুলো।’

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশ পরিদর্শক হাচনাইন পারভেজ বলেন, ‘অতিরিক্ত পর্যটকদের চাপকে মাথায় রেখে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। দর্শনীয় স্পটগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও বিশেষ নজরদারি রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কোনও পর্যটক অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যামেরাম্যানদের বিরুদ্ধে কয়েকজন পর্যটক অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

Source link

Related posts

ভারী বৃষ্টিতে সবজির আবাদ পানির নিচে, লাখো টাকার ক্ষতি কৃষকের

News Desk

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোনও কোনও স্থানে ধীরগতি

News Desk

যশোর সদরে নৌকা-ঈগল-লাঙ্গলের জমজমাট প্রচারণা

News Desk

Leave a Comment