‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দীন আহমদের ভূমিকার জন্য জাতির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। বই বা গবেষণাপত্রে যতবারই মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দীনের অবদানের কথা পড়ি, ততবারই শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। গর্ব অনুভব করি।’
স্বাধীনতাযুদ্ধকালে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ভূমিকা এভাবেই সজল চোখে স্মরণ করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের এই মহানায়ক এমন ব্যক্তি, যিনি সারা জীবন তাঁর কাজে, কথায় ও দায়িত্ব পালনের সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলে যাননি। কখনো সমঝোতা করেননি।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ছয়টি প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল গতকাল শনিবার। চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন মইনুল ইসলাম। এদিন ছিল তাজউদ্দীন আহমদের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী।
বাংলাদেশের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের একেক পর্বে ঘটে একেক ঘটনা। লড়াইয়ের ময়দানে ধাপে ধাপে সাফল্য অর্জনের মাধ্যমে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছায় দেশ। মুক্তিযুদ্ধের নানা কৃতিত্বপূর্ণ ঘটনা ও অর্জন নিয়ে নির্মিত হয়েছে এ ছয় প্রামাণ্যচিত্র। চলচ্চিত্রকার তানভীর মোকাম্মেলের তত্ত্বাবধানে এগুলো নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও নবীন শিক্ষকেরা। চট্টগ্রামে এগুলোর প্রথম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হলো।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি শুধু বিএনপি বা জামায়াত করে না উল্লেখ করে মইনুল ইসলাম এ জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকেও দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, এটাই হলো বাংলাদেশের ট্র্যাজেডি। মুক্তিযুদ্ধের কাহিনি বাংলাদেশে কোনো গুরুত্ব পায় না। সে জন্য মুক্তিযুদ্ধের কান্ডারি তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয় না।
অজ্ঞাত কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কখনো মুজিবনগর সরকারের অনুষ্ঠানে যাননি উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেন, যাঁর যা প্রাপ্য, তা না দেওয়ার ধারাবাহিক ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়।