ঢাকায় চলাচলকারী বাসের দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
বাংলাদেশ

ঢাকায় চলাচলকারী বাসের দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী বন্ধন পরিবহন বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে দিনব্যাপী শহরের ১নং রেল গেট ও লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় লাঠিসোঁটাসহ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

আহতরা হলেন- সিটি বন্ধন পরিবহনের এমডি দেলোয়ার হোসেন, জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন, সিরাজুল ইসলামসহ ১০ জন। আহত বাকিদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সিটি বন্ধন পরিবহনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুব উল্লাহ তপন দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করেন। এই খবরে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী ঝটিকা মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে প্রবেশ করেন। এ সময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ আহত হন। এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে নেতাদের মারধর করা হয়। প্রতিবাদে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের বাস চলাচল বন্ধ রেখেছিলেন পরিবহন শ্রমিকরা। পরে যৌথ বাহিনী গিয়ে অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করে। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

হামলায় আহত নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন জানান, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া সিটি বন্ধন পরিবহনের স্থলে বন্ধন পরিবহন বাস মালিকরা এই সেক্টর তাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে নেতাদের মারধর করে। এতে সিটি বন্ধন পরিবহনের এমডি দেলোয়ার হোসেন, সিরাজুল ইসলামসহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সিটি বন্ধন পরিবহনের নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন লিটন ও এমডি দেলোয়ার হোসেন। অন্যদিকে বিলুপ্ত বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান হিসেবে মাহবুব উল্লাহ তপন রয়েছেন।

মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, মহানগর বিএনপি সদস্য মাহবুব উল্লাহ তাপস বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন বন্ধন পরিবহন বিলুপ্ত করে সিটি বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান হন। পরে পরিবহনের এমডি ও কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আইয়ূব আলী নিয়ন্ত্রণে বাস চলাচল করে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই বিএনপির দুই গ্রুপ পরিবহনটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালাতে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এই ঘটনায় মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুব উল্লাহ তপন ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, বন্ধন পরিবহনের মালিক সমিতির দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পরে যৌথ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Source link

Related posts

‘৪ দিন পানিবন্দি, কবে পাবো ত্রাণ’

News Desk

রাজশাহী মেডিকেলে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ জনের মৃত্যু

News Desk

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার যানজট

News Desk

Leave a Comment