Image default
বাংলাদেশ

ড্রাগন ফলের চাষ করে রংপুরের প্রথম নারী কৃষি উদ্যোক্তার চমক সৃষ্টি

কৃষক বাবার অনুপ্রেরণা থেকেই ড্রাগন ফল চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ফরিদ আলমের স্ত্রী শামীমা আক্তার। রংপুরের প্রথম নারী কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। শামীমা আক্তার ওই উপজেলার রহিমাপুর খানসাহেব পাড়ার শামসুল কাদের সরকারের মেয়ে। তিনি জানান, মাত্র ৫৫ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান করেছিলেন। এরই মধ্যে প্রায় ১শ’ কেজি ফল বিক্রি করেছেন।

শামীমার বাবা শামসুল কাদের সরকারও সফল কৃষক ছিলেন। তিনি নিজের পুকুর ও জমিতে মাছ, লিচু, কলা, আদা চাষে সফলতা পেয়েছেন। কৃষিপণ্য উৎপাদনে সাফল্যের জন্য তিনি পুরস্কৃতও হয়েছেন। বাবাকে দেখেই কৃষিকাজে অনুপ্রাণিত হন শামীমা। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের চারা রোপণ করতেন। ১৯৯৫ সালে প্রকৌশলী ফরিদ আলমের সঙ্গে বিয়ের পর নতুন সংসারে গিয়ে বাড়ির ছাদে নানা প্রজাতির চারা লাগিয়েছিলেন।

বিয়ের পর একবার ভিয়েতনাম ভ্রমণে গিয়েছিলেন শামীমা। সেখানকার সুস্বাদু ড্রাগন ফল খেয়ে নিজের বাড়িতেও চাষের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর বিভিন্ন নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৫৫ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করেন। বাবা শামসুল কাদের সরকারের পরামর্শ ও সহযোগিতায় ২০১৬ সালের শেষদিকে ৮০০ ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করেন। চারাগুলো বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শামীমার আশা ও স্বপ্ন।

রংপুরের প্রথম এ নারী কৃষি উদ্যোক্তা জানান, ড্রাগন ফল বিক্রি করে ভালো আয় হচ্ছে। প্রতিটি গাছে বছরে ৫০-৭০টি পর্যন্ত ড্রাগন ফল ধরে। ওজনে একটি ফল ৬০০-৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ফল ৬০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হয়। বাড়ির আঙিনা অথবা ছাদে ড্রাগন ফল চাষ করে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব।

শামীমা আক্তার জানান, সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে দীর্ঘ সময় ধরে ড্রাগন গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়। পাতাবিহীন হওয়ায় পোকা মাকড়ের তেমন আক্রমণ হয় না। দুই-একবার জমিতে সার দেয়া ছাড়া ছাড়া তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন হয়না। মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও খামারিদের মাঝে বিদেশি এ ফলের চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে বিদেশি ফলের আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে।

রংপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন জানান, ড্রাগন ফল চাষ লাভজনক। এতে খরচ কম, লাভ বেশি। রংপুরে প্রায় ১৫ একর ড্রাগন ফলের বাগান আছে। মিঠাপুকুর, গংগাচড়া ও তারাগঞ্জ উপজেলায় এর চাষ হয়ে থাকে। ড্রাগন ফল চাষে কৃষকদের উৎসাহ দিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। তিনি আরো জানান, রংপুরের সবচেয়ে বড় ড্রাগন ফলের বাগানটির মালিক নারী কৃষি উদ্যোক্তা শামীমা আক্তার। কৃষি বিভাগ বিভিন্নভাবে তাকে সহযোগিতা করছে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কিছু সৌখিন ড্রাগন ফলচাষি আছেন, যারা বাড়ির ছাদে বাগান করেছেন।

Related posts

আড়াই কোটি টাকা ভ্যাট দিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক

News Desk

নেত্রকোনায় পানিবন্দি ২ লাখ মানুষ

News Desk

‌‘এবার এমপি হলে ১৬ ইউনিয়ন হবে স্মার্ট, নিশ্চিত হবে সব সরকারি সেবা’

News Desk

Leave a Comment