ড্রাগন চাষে সফলতা, মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা
বাংলাদেশ

ড্রাগন চাষে সফলতা, মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা

দেশের মাটিতে বিদেশি ফলের চাষ করে দারুণ সফলতা দেখিয়েছেন মিজানুর রহমান মিঠু। তিন বছর আগে ১২ বিঘা জমিতে ড্রাগনের চাষ শুরু করেন। ১৪ মাসের মধ্যেই ফলন পেয়েছেন। প্রথম বছরে ১০ লাখ এবং পরের বছরে ২০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন। হিসাবে দুই বছরে ৩০ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে এখন মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা আয় মিঠুর।

মিজানুর রহমান মিঠু (৩৮) বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী ইউনিয়নের কুপতলা গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে। ২০০৪ সালে সারিয়াকান্দি ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। সংসারে অভাবের কারণে এরপর আর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। জেলা শহরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন।

২০১৬ সালে পৈতৃক ১২ বিঘা জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে মাল্টার বাগান করেন। কিন্তু মাল্টার বাজার মূল্যের চেয়ে খরচ বেশি পড়ায় গাছগুলো কেটে ফেলেন। ওই জমিতে ২০২০ সালের শুরুতে ড্রাগন চাষ করেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ৩০ টাকা দরে ২০ হাজার পিস চারা কিনে রোপণ করেছিলেন। ১৪ মাসের মধ্যেই ফলন পেয়েছেন। এখন বাগানে লক্ষাধিক গাছ রয়েছে। দুই বছর ধরে ফল বিক্রি করছেন। এর মধ্যে প্রথম বছরে ১০ এবং পরের বছরে ২০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন। বছরের মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ড্রাগন উত্তোলন ও বিক্রি করেন তিনি।

এখন বাগানে লক্ষাধিক গাছ রয়েছে

একবার জমিতে ড্রাগন গাছ লাগালে ১২ মাস ফল পাওয়া যায় জানিয়ে মিজানুর রহমান মিঠু বলেন, ‘এখন বাজারে সবকিছুর দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ওষুধ, সেচ, নিড়ানি ও শ্রমিক খরচসহ অন্যান্য খাতে মাসে ৫০-৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে গত দুই বছরে ১০-১২ লাখ টাকা আয় হয়েছে।’

বাগানে পাঁচ জন যুবক কাজ করছেন, তারা সার্বক্ষণিক দেখভাল করেন উল্লেখ করে মিঠু আরও বলেন, ‘চাকরির পাশাপাশি আমিও বাগানে সময় দিই। প্রতি বছর আয়ের পরিমাণ বাড়ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ড্রাগন ২৫০-২৭০ টাকায় বিক্রি করছি। প্রতিটি গাছে দুই থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। অনেকে চাষাবাদ সম্পর্কে পরামর্শ নিতে আসেন। আমি তাদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করছি।’

প্রথম বছরে ১০ এবং পরের বছরে ২০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন মিঠু

মিঠুর বাগানে কাজ করছেন কুপতলা গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান মজিদ। তিনি বলেন, ‘এখানে কাজ করে মাসে ১৬ হাজার টাকা বেতন পাই। এই বেতনে সংসার চলে। আমরা পাঁচ জন বাগানে সর্বোচ্চ শ্রম দিই।’

ড্রাগন চাষে মিঠুর সফলতার কথা জানেন সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে উপজেলার অনেক এলাকায় ড্রাগন চাষ হচ্ছে। মিঠুর সফলতা দেখে এলাকার অনেকে ড্রাগন চাষ করছেন। এতে লাভবান হচ্ছেন তারাও। শিক্ষিত ও বেকার যুবকরা মিঠুর মতো কৃষিকাজে মনোযোগ দিলে অল্প সময়ের মধ্যে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।’

Source link

Related posts

খুলনা করোনায় ১৭ মাস পর মৃত্যুশূন্য

News Desk

দৃষ্টিহীনতা বাধা হতে পারেনি অদম্য মেধাবী ঐতির

News Desk

২৫ লাখ টাকার গৌরমতি আম বিক্রির আশা শাহীনের

News Desk

Leave a Comment