দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারিদের ধরতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় স্টেশনের কুলি সর্দারসহ টিকিট কালোবাজারি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দুটি টিকিট ও টিকিট বিক্রির এক হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রেল স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আহসানুল কবির পলাশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো বিরল উপজেলার ২ নম্বর ফরক্কাবাদ ইউনিয়নের জয়নুল মুদিখানা এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে রুস্তম আলী (৪৫) ও দিনাজপুর শহরের সুইহারি মির্জাপুর এলাকার মামুনুল ইসলামের ছেলে ফারুক হোসেন (৫০)। ফারুক দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের কুলি সর্দার। তার কাছে কালোবাজারে বিক্রির একটি টিকিট পাওয়া গেছে। রুস্তম আলীর কাছে আরেকটি টিকিট পাওয়া গেছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় টিকিট কালোবাজারির গোপন তথ্য পায় দুদক। পরে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া তাদের সহযোগীদের ধরতে দুদকের অভিযান চলমান থাকবে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় প্রতিদিনই কালোবাজারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের এজন্য ভোগান্তিতে পড়তে হয় প্রতিদিন। নির্ধারিত মূল্যে টিকিট পাওয়া যায় না। কাউন্টার থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, টিকিট নেই। অথচ পরে ওই টিকিট পাওয়া যায় কালোবাজারিদের কাছে। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে টিকিট কিনতে হয়।
ট্রেনযাত্রী চয়ন ভৌমিক বলেন, কিছুদিন আগেও আমাকে শোভন চেয়ারের ৪৬৫ টাকার টিকিট কিনতে হয়েছে ৭৫০ টাকায়। এসি চেয়ারের টিকিট তো পাওয়াই যায় না। দ্বিগুণ অথবা তিনগুণ দামে কিনতে হয়। কালোবাজারিদের হাতে সাধারণ ক্রেতারা জিম্মি।
দিনাজপুর জিআরপি থানার ওসি এরশাদুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমরা প্রতিদিনই চেষ্টা চালাচ্ছি কালোবাজারিদের নিয়ন্ত্রণ করতে। এজন্য আমাদের পাশাপাশি ক্রেতাদের সচেতন হতে হবে।
দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিন্টেনডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেন, আমরা যাবতীয় কার্যক্রম স্বচ্ছভাবে চালাচ্ছি। যারা কালোবাজারি করছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। যাত্রীদের পাশাপাশি সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।