ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওর সূত্র ধরে তদন্তে নেমে প্রকাশ্যে কিশোরীকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, গালিগালাজ ও মারধর করায় গ্রেপ্তার হয়েছেন আরেক টিকটক হৃদয়। গতকাল সোমবার তাকে গ্রেপ্তার করে যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেটিতে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ি থানার অধীন শনির আখড়া ফুটওভার ব্রিজের ওপর পথচারীদের উপস্থিতিতেই এক কিশোরীকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির পাশাপাশি অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করছে এবং নির্বিচারে মাথায় ও গালে আঘাত করছে এক যুবক। ঘটনাস্থলে যুবকের সঙ্গে আরেক কিশোরীসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিল।
ওই যুবকের নাম সাদ্দাম হোসেন ওরফে টিকটক হৃদয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর একজন সচেতন নাগরিক তা বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে পাঠান। পরে উইং থেকে ভিডিওটি যাত্রাবাড়ি থানার ওসি মাজহারুল ইসলামের কাছে পাঠানো হয়। ওই ভিডিওর সুত্র ধরেই ভুক্তভোগী কিশোরীকে খুঁজে বের করে ও টিকটক হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
যাত্রাবাড়ি থানার পুলিশ জানায়, ওসি মাজহারুল ইসলাম ভিডিওটি পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীকে খুঁজে বের করতে তার একটি টিমকে নিয়োজিত করেন। ভিডিওতে কোনো নাম-ঠিকানা বা কোনো প্রাসঙ্গিক তথ্য না থাকায় গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে অভিযুক্তের পরিচয় বের করা হয়।
গ্রেপ্তার সাদ্দাম হোসেন ওরফে হৃদয় যাত্রাবাড়ি এলাকায় বাস করেন। ঘটনাস্থল বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভুক্তভোগীকে আগে কেউ কখনো দেখেনি। তবুও হৃদয়কে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ নানা স্থানে অভিযান চালায়।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা বলেন, ঘটনার পরপরই চতুর হৃদয় এলাকা ত্যাগ করে। ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থান করে। পুলিশও তার পেছনে দীর্ঘদিন লেগে থেকে অবশেষে গতকাল বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করে। হৃদয়কে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তিনি টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তার বিকৃত অদ্ভুত স্টাইল প্রচার করে মেয়েদেরকে কৌশলে আকৃষ্ট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বস্বান্ত করে আসছিলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় মেয়েদেরকে জিম্মি করে টাকাপয়সা আদায় করতেন তিনি। মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতেন ও সম্ভ্রমহানি করতেন।
পুলিশ আরও জানায়, উল্লিখিত ঘটনাটি ঘটেছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে’র দিন। ভুক্তভোগীকে খুঁজে বের করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আটক সাদ্দাম হোসেন ওরফে হৃদয় একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামি বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
