জিলাপিতে তরমুজ-আমের মিশ্রণ, মানবদেহের জন্য ক্ষতির আশঙ্কা
বাংলাদেশ

জিলাপিতে তরমুজ-আমের মিশ্রণ, মানবদেহের জন্য ক্ষতির আশঙ্কা

খাবারে ফ্লেভার যুক্ত করে রঙ ও স্বাদ বদলের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এ গল্প পুরনো হলেও নিত্য নতুন ফর্মুলায় তা সাধারণের সামনে আসছে, পাচ্ছে জনপ্রিয়তা। এবার তরমুজ ও কাঁচা আমের জিলাপি নিয়ে বেশ সরগোল চলছে। সাধারণ জিলাপির উপকরণের সঙ্গে তরমুজ ও কাঁচা আমের মিশ্রণ পরিমাণ মতো মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে এ জিলাপি। তবে তেলে ভাজার ফলে তরমুজ ও আমের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। যা মানবদেহের ক্ষতি কারন হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

এর আগে গত বছর ডুমুরিয়ায় এক দম্পতি তরমুজ থেকে গুড় তৈরি করে আলোড়ন তুলেছিলেন। এবার প্রাকৃতিক উপকরণ মিশিয়ে জিলাপি তৈরিতে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি হলো। 

রমজানে ইফতারিতে থাকে নানা আয়োজন। ইফতার মানেই বেগুনি, পেঁয়াজু, ভেজিটেবল রোল, চিড়িং চপ, ডিম চপ, চিকেন ক্রেসপি, শাহী জিলাপি, পাটিশাপটা, কামমিরি টিকিয়া, রোল মালাইকারি, ফিরনি, ফ্রুট সালাত, কাবাব, রেশমি জিলাপি, বার্বিকিউ, বার্গার, ফালুদা, লাচ্চি, বুন্দিয়া, শাহী হালিমসহ বাহারি খাবার আইটেম। এসব চেনা ইফতার সামগ্রীতে নতুন স্বাদ ও ভিন্নতা যুক্ত করেছে কাঁচা আম ও তরমুজের জিলাপি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খালিশপুরের বিআরডিসি রোডের চিত্রালী সিনেমা হলের সামনে ইসলামিয়া মিষ্টি ঘরে তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে এ জিলাপি। নতুনত্ব আর ভিন্ন স্বাদের জিলাপি কিনতে দূরদূরান্ত থেকে আসছেন ক্রেতারা। ভিন্নস্বাদের এ জিলাপির কথা এলাকা ছাড়িয়ে এখন ছড়িয়ে পরেছে প্রত্যন্ত এলাকায়। 

দোকান মালিক আবদুস সোবহান রিপন বলেন, ১৯৮৭ সাল থেকে আমাদের মিষ্টির ব্যবসা। ছোটভাই আলামিন আর আমি এবার ইফতারিতে নতুন কিছু করার চিন্তা করি। নতুন চিন্তা থেকেই তরমুজ আর আমের জিলাপি তৈরির পরিকল্পনা। গত ১২ এপ্রিল তরমুজ দিয়ে জিলাপি তৈরি করা হয়। এ জন্য ভালো রংঙের তরমুজ কিনতে হয়। কারণ জিলাপিতে কোনও ফুড কালার ব্যবহার করা হয় না। 

তিনি আরও জানান, ইফতারিতে অনেকেই নতুন স্বাদের খাবার পছন্দ করেন। যারা ভিন্ন স্বাদের খাবার পছন্দ করেন তাদের মধ্যে তরমুজের জিলাপি বেশ সাড়া ফেলেছে। এই জিলাপি তৈরিতে সাধারণ জিলাপির সব উপকরণই থাকে, সঙ্গে যুক্ত হয় তরমুজ ও কাঁচা আম। এগুলো ব্ল্যান্ড করে মেশাতে হয়।

আল আমিন আরও বলেন, এই ২ ধরনের জিলাপি ইফতারে লোকজনের খুবই পছন্দ। ১২ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই জিলাপির চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। প্রতি কেজি জিলাপির দাম রাখা হচ্ছে ২৫০ টাকা। তিনি জানান, প্রথমে ১০ কেজির খামি দিয়ে শুরু করি। চাহিদা বাড়ায় ১৬ এপ্রিল তৈরি হয় ২৫ কেজির খামি।

ক্রেতা সাবিহা আক্তার মিম বলেন, বান্ধবীর থেকে খবর পেয়ে তরমুজের জিলাপি শুনে অবাক হলাম। তাই রবিবার কিনলাম। দেখতে খুবই ভালো লাগছে। যেহেতু রোজা তাই খেয়ে দেখিনি। তবে আশা করি ভালো হবে।

ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন স্বাদের হতে পারে তাই কিনলাম। ইফতারে খেয়ে বুঝতে পারবো স্বাদ কেমন। সাধারণ জিলাপি কিনতে লাগে কেজি প্রতি ১৩০ টাকা। নতুন স্বাদের জিলাপি কেজি প্রতি ২৫০ টাকা।

কাশিপুরের বাসিন্দা ওমর হাসান বলেন, বাসার পাশেই তরমুজের জিলাপি তৈরি হচ্ছে। তাই কিনতে এলাম। পরিবারে জন্য ৬০ টাকার কিনলাম। ভালো লাগলে আবার এসে কিনবো।

তবে তরমুজ ও আমের জিলাপি নিয়ে সতর্ক করেছেন খুলনা শিশু হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এস আরেফিন টুটুল। তিনি বলেন, তরমুজ ও কাঁচা আমে কিছু পুষ্টিগুণ থাকে, যা আগুনের তাপে নষ্ট হয়। এটা মানবদেহের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য। 

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ খুলনা জেলার সহকারী পরিচালক শাহীনুর রহমান শিকদার বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা ২/১ দিনের মধ্যে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করব। তরমুজ বা আমের সাথে কোন প্রকার রাসায়নিক দেয়া হয় কী না, তা দেখা হবে। আর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে খাবারের মান ও পুষ্টিগুণের বিষয়টিও দেখা হবে। কোন ধরনের সমস্যা পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Source link

Related posts

মেঘনা নদী থেকে অপহৃত ৭ জেলে উদ্ধার

News Desk

‘শেখ হাসিনাকে টিকা চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা দিলো গ্যাভি’

News Desk

অন্যের হয়ে জেল খাটা মিনু কারামুক্ত

News Desk

Leave a Comment