‘হেলমেট পরিধান করি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ এই স্লোগানকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ ‘নো হেলমেট নো রাইড’ কর্মসূচি চালু করেছে জামালপুর জেলা পুলিশ। বুধবার বিকালে শহরের জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ সড়কের মির্জা আজম চত্বরে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম।
পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বুধবার বিকালে মির্জা আজম চত্বরে কয়েকজন হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল আরোহীকে থামিয়ে তাদের নিজের জীবন বাঁচাতে হেলমেটের গুরুত্ব এবং মাথায় হেলমেট পরে মোটরসাইকেল চালানোর অনুরোধ জানান। তাদের আইন মেনে চলারও অনুরোধ করেন তিনি। সবাই হেলমেট পরে মোটরসাইকেল চালালে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমে আসবে বলেও তাদের বোঝান। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলে ‘নো হেলমেট নো রাইড’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে হেলমেট ব্যবহারে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার।
এ সময় কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরে পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জমান বলেন, ‘জীবন আমাদের একটাই। আর এই জীবন আমাদের নিজের জন্য না যতটা জরুরি, পরিবারের জন্য তার চেয়ে বেশি জরুরি। আমার কিছু হলে, আমার পরিবার যে কী অবস্থায় পড়বে—সেটি কিন্তু যে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তিনি এবং তার পরিবার বোঝেন। আমরা প্রতিবছরই দেখি সড়ক দুর্ঘটনায় বহু লোক মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা কিন্তু সবচেয়ে বেশি। মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনাগুলো হয় সাধারণত মাথায় হেলমেট না থাকার কারণে। ছোট্ট একটি দুর্ঘটনায় আপনার মাথা যদি অরক্ষিত থাকে সেজন্য বড় কোনও ক্ষতি বা মৃত্যু পর্যন্তও হয়ে যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের স্লোগান “নো হেলমেট নো রাইড”। এর মানে হলো, আপনি হেলমেট না পরে আপনার মোটরসাইকেলটি নিয়ে বের হবেন না। এটার মূল উদ্দেশ্য হলো, অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই কয়েকটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আমরা দেখেছি আমাদের উজ্জ্বল কয়েকটি নক্ষত্র হারিয়ে গেছে। মেডিক্যালের সরকারি কর্মকর্তা-চিকিৎসক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নিরীহ মানুষরা কিন্তু ছোট্ট দুর্ঘটনায় মাথায় হেলমেট ছিল না বলেই মারা গেছেন। তাদের মাথায় যদি হেলমেট থাকতো তাহলে প্রত্যেকটি জীবন কিন্তু সুরক্ষিত হতো।’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা এই সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু করেছি। আশা করি মাসব্যাপী তথা বছরব্যাপী এই কর্মসূচি চলবে। “নো হেলমেট নো রাইড” এটা আমরা বলেই যাবো। যত দিন পর্যন্ত না তারা আইনকে সম্মান করতে শিখবে। আমরা কিন্তু পিছপা হবো না। আজকে কিছু স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে এই কর্মসূচি শুভ উদ্বোধন করলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেকে প্রত্যেককে বোঝাতে হবে যে, একটি হেলমেটের কারণে জীবনটাই যদি হারিয়ে যায়, তোমার পরিবারই কিন্তু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আশা করি, আমরা যদি বোঝাতে পারি তাহলে জামালপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কোনও মৃত্যু হবে না। দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে কিন্তু হেলমেট পরলে মৃত্যুর হার অনেক কমে আসবে।
এ সময় সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহিদ আনোয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল আহমেদ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহরাব হোসেন, জামালপুর সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহব্বত কবীর, ডিবির ওসি মো. কাজী শাহ নেওয়াজ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আব্দুর রহিম ভূইয়াসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।