জমজমাট চট্টগ্রামের নিউমার্কেট, দিনে বিক্রি ১৫ কোটি
বাংলাদেশ

জমজমাট চট্টগ্রামের নিউমার্কেট, দিনে বিক্রি ১৫ কোটি

চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে জমেছে ঈদের বেচাকেনা। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর নিউমার্কেটে ভিড় ছিল না। সেই সঙ্গে দোকানপাট খোলার ব্যাপারে বিধিনিষেধ ছিল। এখন করোনা পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে গেছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। ২০ রমজানের পর থেকে মার্কেটে দিনরাত সমানভাবে বেচাকেনা হচ্ছে। এখন আর মার্কেটের দোকানগুলো বন্ধ করা হয় না। ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। দিনে একেক দোকানে সর্বনিম্ন তিন লাখ টাকা বেচাকেনা হয়। আবার কোনও কোনও দোকানে ১০ লাখ পর্যন্ত হয়। সবমিলে মার্কেটের ৫১২ দোকানে দিনে ১৫ কোটি টাকার ওপরে বেচাকেনা হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে নিউমার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, অনেকে সপরিবারে, কেউ বন্ধু-বান্ধব আবার কেউ একা ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। ক্রেতারা এক দোকান থেকে ঢুঁ মারছেন আরেক দোকানে। কিনছেন পছন্দের পোশাক।

নিউমার্কেটে বেশ কিছু নামিদামি শোরুম আছে। শৈল্পিক শোরুমে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এখানে এক দামে পণ্য বিক্রি হয়। বিক্রয়কর্মীদের দম ফেলার ফুসরত নেই।

শৈল্পিক শোরুমের বিক্রয়কর্মী নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘এবার বেচাকেনা অনেক ভালো। এখানে নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুদের সব ধরনের পোশাক রয়েছে। সকাল থেকে শেষরাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় থাকছে।’

এদিকে, দেশি-বিদেশি ঈদ পোশাকের সমাহার নিয়ে সাজানো হয়েছে মার্কেটের বাঙালি বাবু, জেন্টলম্যান, শাড়িকা, সিলকি ফ্যাশন, তারা শাড়িজ, শাড়ি কালেকশন, ওয়াদুদ ব্রাদার্স, পাবনা শাড়িজ, চারুলতা, টাঙ্গাইল শাড়িজ, প্রাইড টেক্সটাইল ও পারফেক্ট টেক্সটাইল।

ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সাকিব উদ্দিন বলেন, ‘নিউমার্কেটে এক ছাদের নিচে সব ধরনের পোশাক পাওয়া যায়। এ কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছি। এক দামে বিক্রি হয় এ ধরনের শোরুম থেকে কেনাকাটা করবো। কেননা ওসব দোকানে দরদামের ঝামেলা থাকে না। পোশাকের মানও ভালো থাকে।’

চট্টগ্রাম নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ সাগির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৯৬৪ সালে যাত্রা শুরু করেছে নগরীর ঐতিহ্যবাহী নিউমার্কেট। চারতলা মার্কেটে ৫১২ দোকান রয়েছে। এর মধ্যে নিচতলায় থান কাপড়, তৈরি পোশাক, শাড়ি, পাঞ্জাবি ও থ্রিপিসসহ বিভিন্ন পোশাক রয়েছে। দোতলায় জুয়েলারি, কসমেটিকস ও ঘড়ির দোকান। তিনতলায় জুতা, তৈরি পোশাক এবং চারতলায় আছে ইলেকট্রনিকসের পণ্য।’ 

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে

তিনি বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো। করোনার সংক্রমণ নেই বললেই চলে। এজন্য মার্কেটে আসছেন ক্রেতারা। দিনে-রাতে সমানতালে বিক্রি হচ্ছে। শেষ সময়ে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে।’

তবে মঞ্জুরুল আহসান নামে এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, ‘নিউমার্কেটের সামনে দুই পাশে অবৈধভাবে হকার বসে। এ কারণে মার্কেটের সামনে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। হকার উচ্ছেদের জন্য একাধিকবার সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা।’

চট্টগ্রাম নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত দুই বছর করোনার কারণে নিউমার্কেটে তেমন ব্যবসা হয়নি। এবার ২০ রমজানের পর বেচাকেনা জমে উঠেছে। নিউমার্কেটে ৫১২ দোকান আছে। প্রতিদিন একেক দোকানে দুই থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হচ্ছে। বলা যায় গড়ে প্রতি দোকানে অন্তত তিন লাখ টাকা করে বেচাকেনা হয়। সে হিসাবে ৫১২ দোকানে প্রতিদিন ১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়।’

Source link

Related posts

প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফল নিয়ে নতুন বিতর্ক

News Desk

করোনায় একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু

News Desk

পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব

News Desk

Leave a Comment