চট্টগ্রামে বন্যায় ২৮ হাজার ঘরের ক্ষতি
বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে বন্যায় ২৮ হাজার ঘরের ক্ষতি

মো. হাফেজ (৫০)। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার উত্তর আমিরাবাদ চট্টলা পাড়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। সাম্প্রতিক বন্যায় তার মাথাগোঁজার একমাত্র ঠাঁই বসতঘরটিও ধসে পড়েছে। পাঁচ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে এখন অন্যের বাড়িতে দিন কাটছে তার।

হাফেজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বন্যা আমার একমাত্র আশ্রয়টুকু কেড়ে নিয়েছে। আমি চট্টগ্রাম শহরে একটি ভবনে পাহারাদারের চাকরি করি। বেতন যা পেতাম এবং বাড়িতে আমার ক্ষেত-ফসল থেকে যা উপার্জন হতো তা দিয়ে কোনোভাবে সংসার চলতো। বন্যায় ক্ষেত-ফসল এবং আমার মাটির ঘর সবই শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে ঘর তোলার মতো সামর্থ্যও আমার নেই। এখন পাঁচ মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। কীভাবে কী করবো বুঝতে পারছি না।’

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার ১৫টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলায় ২৮ হাজার ৭০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে সম্পূর্ণ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯ হাজার ১৮৫টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৮৮৫টি। ১৪টি উপজেলার ১৬১টি ইউনিয়ন বন্যার কবলে পড়ে। এতে ৮ লাখ ৫০ হাজার ২৩৫ জন লোক বন্যার কবলে পড়েন।

এতে বলা হয়, হাটহাজারী উপজেলায় ৬টি সম্পূর্ণ এবং দুই হাজার ৬০৬টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাউজানে দুই হাজার ৭৯২টি ঘর, রাঙ্গুনিয়ায় ১৫টি, পটিয়ায় ৭১০টি, কর্ণফুলীতে ৩৫টি, আনোয়ারায় ১৪৩টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চন্দনাইশে ৪ হাজার ১২০ ঘর পুরোপুরি এবং ৬ হাজার ৩৭৯টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাতকানিয়ায় ২ হাজার ৪৮৯টি সম্পূর্ণ এবং ৩ হাজার ৮০৫টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লোহাগাড়ায় ২ হাজার ৫০০টি সম্পূর্ণ এবং ২ হাজার ঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁশখালীতে ৭০টি পুরোপুরি এবং ৪০০টি আংশিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

চট্টগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর ২৮ হাজারেরও বেশি ঘর

লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ বলেন, ‘স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় শুধু আমার ইউনিয়নে ৩০০টির বেশি মাটির ও সেমিপাকা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার ইউনিয়নে ৮০ শতাংশ বাড়িতে পানি ঢুকেছে। বন্যার সময় বাসিন্দাদের অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। তবে যে পরিমাণ সরকারি সহায়তা পাওয়া গেছে তা অপ্রতুল।’

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক বন্যায় ১৪টি উপজেলায় ২৮ হাজার ৭০টি ঘর আংশিক ও পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ৫৩১ টন চাল, ১৫ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা, পাঁচ হাজার ৫০ ব্যাগ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে।’ 

Source link

Related posts

বক্তব্য দেওয়ার সময় মঞ্চে লুটিয়ে পড়লেন জাকের পার্টির চেয়ারম্যান

News Desk

কক্সবাজারে রাখাইন বর্ষবরণে জলকেলি উৎসব শুরু

News Desk

লঞ্চ সংকট, উত্তাল মেঘনায় ঘরমুখো যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

News Desk

Leave a Comment