গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ করছে কোকোলা কারখানার শ্রমিকেরা। এ সময় বিক্ষোভরত শ্রমিকদের ওপর কারখানার ভেতর থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপের অভিযোগ তোলা হয়। এতে অন্তত ১৫-২০ জন শ্রমিক আহত হন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মৌচাক এলাকার কোকোলা ফুড প্রডাক্ট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, তারা সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে কারখানায় প্রবেশ না করে গেটের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ভেতরে থাকা অন্যান্য স্টাফ ও শ্রমিকরা বাইরে অবস্থান নেওয়াদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়।
শ্রমিকদের দাবি, কারখানার ভেতর থেকে নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতে ১৫-২০ জন শ্রমিক আহত হন। তাদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকরা বলেন, সরকার আমাদের জন্য যে বেতন নির্ধারণ করেছে আমরা সেটাই চাচ্ছি, অতিরিক্ত কিছু চাচ্ছি না। সারা দিন পরিশ্রম করে মাস শেষে সাড়ে ছয় হাজার টাকা বেতন পাই। এ টাকায় তো সংসার চলে না। কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। মালিক পক্ষ সরকার ঘোষিত বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন না করলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমরা তো আমাদের ন্যায্য অধিকারের আন্দোলন করছি। আমাদের ওপর কেন হামলা করা হবে?
গাজীপুরের শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক মজুমদার বলেন, মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। শ্রমিকরা কথা না শুনে কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা করে এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ অনেকটা বাধ্য হয়েই শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে।
কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিসুর রহমান বলেন, আজকে যারা আন্দোলন করেছে তারা আমাদের শ্রমিক নন। আমরা আগেই শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে তাদের বেতন ১৩০০ টাকা বৃদ্ধি করে আট হাজার টাকা করেছি। বাইরের শ্রমিকরা আক্রমণ করায় আমদের শ্রমিকরা পাল্টা জবাব দিয়েছে।