খুলনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত ৬০, আটক ৭৫
বাংলাদেশ

খুলনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত ৬০, আটক ৭৫

খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় ৭৫ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে মহানগরের সাতরাস্তা মোড়ে বিএমএ কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর রয়্যাল মোড়, শান্তিধাম, মডার্ন ফার্নিচারের মোড়, বাইতিপাড়া, মৌলভীপাড়া, পিটিআই মোড় থেকে টুটপাড়া কবরস্থান মোড় পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা পিটিআই মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। একপর্যায়ে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭৫ শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে খুলনা সদর থানা পুলিশ ১১ জন ছাত্রীসহ ৪৬ জনকে, সোনাডাঙা থানা চার ছাত্রীসহ ১৮ জনকে ও দৌলতপুর থানা ১১ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।

পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি সফল করতে দুপুর ১২টায় রয়্যাল মোড়ে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। মিছিলের আগে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ১৭ জন ছাত্রছাত্রীকে আটক করা হয়। এ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে আহসানউল্লাহ কলেজের ভেতরে ছাত্রছাত্রীরা ঢুকে গেট বন্ধ করে দেন। কলেজের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। এরপর ময়লাপোতার মোড়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের আরেক গ্রুপ সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা আবারও জড়ো হয়ে ময়লাপোতা থেকে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রয়্যালের মোড়ে যান। সেখান থেকেও কয়েকজনকে আটক করা হয়। এ সময় দুটি প্রাইভেটকার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শুরু হয় পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে রয়্যাল মোড়, শান্তিধাম, মডার্ন ফার্নিচার মোড়, বাইতিপাড়া, মৌলভীপাড়া, পিটিআই মোড় পর্যন্ত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতঙ্কে এসব এলাকার দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার বলেন, ‘পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেটে অন্তত ৬০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে পুলিশ অন্তত ৭৫ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে। আমি নিজেও আহত হয়েছি।’

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল আর কোনও ছাত্রকে আন্দোলন করতে দেওয়া হবে না। বুধবার সেই ঘোষণা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তারা। আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। আমাদের ওপর হামলা করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কতজনকে আটক করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’

Source link

Related posts

বরকে রেখে পালালো সহযাত্রীরা

News Desk

২৩ মে খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

News Desk

প্রথম ধাপে যে ২০ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বসছে সার্চ কমিটি

News Desk

Leave a Comment