সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার পরিবার যে আবেদন করেছে, সে বিষয়ে আজ কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। মন্ত্রী জানান, আইন মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যেই মতামত দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, শামীম ইস্কান্দার যে আবেদন করেছেন, এটা রিপোর্টে আছে। আমি ফাইলগুলো নিয়ে যাচ্ছি মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে। মতামত দিলে সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সামারি (সংক্ষিপ্ত) আকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে।
সচিবালয় থেকে লিখিত আবেদন সংক্রান্ত ফাইল বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রীর বাসায় নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আবেদনে কোনো দেশের কথা বলা আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, না, তারা কোনোকিছু উল্লেখ করেননি। শুধু চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কথা বলেছেন। আর কিছু বলেননি।
বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত করেই লিখিত আবেদন করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতার জন্য গতকাল (বুধবার রাতে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন পৌঁছে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডামকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে সবুজ সংকেত (ইতিবাচক সাড়া) পেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেদিন তার বাসভবন ফিরোজায় আরও ৮ জন ব্যক্তিগত স্টাফও করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে ২৭ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে।
গত সোমবার (৩ মে) সকালের দিকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছরের মতো কারাগারে ছিলেন তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয়। দুই দফায় এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।