ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কুষ্টিয়ার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যেটি চলতি বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার বিকাল ৩টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত জেলায় এই বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে চলতি মৌসুমে আগাম শীতে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। বিপাকে পড়েছে গবাদিপশু পালনকারীরাও।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪/৫ দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও হালকা আবার কখনও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। একনাগাড়ে বৃষ্টির কারণে জনজীবনে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকার রাস্তা তলিয়ে গেছে। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল, কলেজ ও অফিসগামীসহ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষরা।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা আদাবাড়ীয়া ইউনিয়নের টমেটোচাষি ওয়ারেস আলি জানান, তার তিন বিঘা টমেটোক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে, এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে পুরো ক্ষেতের গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একই এলাকার দুখুমিয়া নামের আরেক কলাচাষি জানান, পুরো কলাক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। দ্রুত যদি পানি নিষ্কাশন না হয় তবে পুরো ক্ষেতের কলা নষ্ট হবার সম্ভবনা রয়েছে।
আশিক নামের এক নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান, বৃষ্টির কারণে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত কম থাকে।
স্থানীয় মিরপুর পৌরসভার সুলতানাপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে বাড়ির ভেতর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। গত রাত থেকে গবাদিপশুগুলোও বেশ কষ্টের মধ্যে আছে।’
মিরপুর বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইমান আলী বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য নেই বললেই চলে। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছে না। বৃষ্টির কারণে আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।’
কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাবলুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলায় ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যেটি চলতি বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। শুক্রবার পর্যন্ত এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শনিবার রোদের দেখা মিলতে পারে।’