কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিএনপি ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে উপজেলা শহরের তিনকোণা মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে দলটির উপজেলার নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা সরকার বিরোধী স্লোগান দিলে উপজেলা ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতৃবৃন্দ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়।
দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি উপলক্ষে শনিবার বিকালে ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ফুলবাড়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী পোদ্দার রতন বিএনপির নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য আহ্বান জানান। কিছুক্ষণ পর বিএনপির সমর্থকদের কয়েকটি অটোরিকশা উপজেলা সদরে প্রবেশ করে প্রধানমন্ত্রী ও সরকার বিরোধী স্লোগান দেয়।
তখন উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। খবর পেয়ে সমাবেশ স্থল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে উপজেলা সদরের তিনকোণা মোড়ে এলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রলীগর যুগ্ম সম্পাদক সজল পোদ্দার, লোকমান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক তাহাদ হাসান তুষার, বায়জিদ বোস্তামী বাঁধন এবং উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন সরকার, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রেজাউল ইসলাম রেজা, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা, বিএনপি কর্মী তোতা মিয়া, যুবদল কর্মী রেজাউল, আয়নাল, আলামিন, শফিকুল ইসলামসহ ২০ জন আহত হন। পরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তৌকির হাসান তমাল দাবি করেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। আমরা এর প্রতিবাদ করলে সংঘর্ষ হয়। তারা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। হামলায় আমাদের সাত ছাত্রলীগ কর্মী আহত হন। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান মুকুল দাবি করেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের ১০/১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী পোদ্দার রতন দাবি করেন, আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি। তারপরও বিএনপির লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
ফুলবাড়ী থানার ওসি প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।