Image default
বাংলাদেশ

কালিয়াকৈরে ৪০০ বিক্রেতার মাছের হাট

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা শহরের কালিয়াকৈর-টাঙ্গাইল সড়কের দুই পাশে কমপক্ষে ৪০০ জন মাছ ব্যবসায়ী মাছ বিক্রি করেন। প্রতি শুক্রবার সড়কের দুই পাশে প্রায় ৫০০ মিটারজুড়ে মাছের বাজার বসে। মাছ বাজারের কারণে ওইদিন ভোর থেকে সড়কটিতে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। কালিয়াকৈর ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার ক্রেতা মাছ কিনতে ওই বাজারে ভিড় করেন। বাজারের বৈশিষ্ট্য হলো, ছোট থেকে বড় এবং দেশে প্রচলিত এমন প্রায় সব মাছই পাওয়া যায়। পাশের জেলা টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ ও পাবনার খাল-বিল থেকেও জেলেরা মাছ নিয়ে এখানে বিক্রি করতে আসেন।

সড়কের দুই পাশে বসা মাছ বিক্রেতাদের পেছনের সারিতে মাংস ও সবজি বিক্রেতাদের সারিবদ্ধ লাইন রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সূর্যোদয়ের ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই মাছের বাজার বসতে শুরু করে। চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। খোলা আকাশের নিচে বসা এসব বিক্রেতা রোদ বৃষ্টি সামলাতে রঙবেরঙের ছাতা ব্যবহার করেন। 

মাছ বিক্রেতা আব্দুল জলিল জানান, তিনি ৩০ বছর ধরে ইলিশ মাছের ব্যবসা করেন। ঢাকার কাওরানবাজার, বাইপাইল আড়ত থেকে মাছ কিনে এনে বিক্রি করেন। তার মতো অনেকেই রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ থেকে রুই, কাতল, মৃগেল মাছ এনে বিক্রি করেন।

বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই মাছ বাজারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো অধিকাংশ মাছ জীবন্ত ও তাজা। রাজধানী ঢাকাসহ দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা এই বাজারে আসেন। বাজারে বেচাকেনা অনেক বেশি হয়। তাজা মাছ এবং সাশ্রয়ে কেনার জন্য ক্রেতাদের ভিড় জমে।

ক্রেতা লিয়াকত আলী বলেন, অন্যান্য বাজার থেকে কালিয়াকৈরে সাশ্রয়ে মাছ কেনা যায়। মাছ কাটার জন্যও অনেক লোকজন থাকে। ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত পাইকারদের ভিড় থাকে বেশি। শিল্পাঞ্চল এলাকা হওয়ায় এ বাজারে ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

মাছ কাটার কাজ করা শহীদ বলেন, মানুষের হাতে বর্তমানে টাকা-পয়সা কম। তাই এখন কম মাছ কাটা হয়। শুক্রবার বাজারের দিনে বেশি মাছ কাটা পড়ে। মাছ কেটে খরচ বাদে সারা দিনে ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা আয় হয় তার।

 

মাছ কাটায় নিয়োজিতদেরও ব্যস্ত সময় কাটে এদিন

শওকত আলী জানান, তিনি বিল থেকে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করেন। আবার কখনও কখনও কিনেও বিক্রি করেন। এ বাজারে বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা মাছ কিনতে আসেন। তিন শতাধিক বিক্রেতা রয়েছেন, যারা মাছ বিক্রি করেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এখন মাছ ধরে বিক্রি করে পোষায় না। ব্রিটিশ আমল থেকে এ বাজারের প্রচলন রয়েছে, যা এখনও চলছে।

১২ বছর এ বাজারে মাছ বিক্রি করছেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, অনেক এলাকা থেকে লোকজন এ বাজারে মাছ কিনতে আসে। কেজিতে অন্যান্য বাজারের তুলনায় ১৫-২০ টাকা কমে বিক্রি হয়। বর্তমানে দাম বেশি হওয়ায় বিক্রি কম। তবে প্রতি মাসের ৮ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত মাছ বিক্রি বেশি হয়। শিল্পাঞ্চলগুলোতে ওই সময়ে বেতন-ভাতা দেওয়ার কারণে এমনটা হয় বলে দাবি তার।

বিক্রেতা সুভাষ চন্দ্র বলেন, ১০ বছর মাছ বিক্রি করছেন এ বাজারে। কালিয়াকৈর-টাঙ্গাইল সড়কের দুই পাশে হাফ কিলোমিটারজুড়ে মাছের বাজার বসে। রোদ বৃষ্টি মোকাবিলার জন্য বড় আকারের ছাতা টানিয়ে সারা দিন মাছ বিক্রি করেন তারা। এ বাজারে কমপক্ষে ৪০০ মাছ বিক্রেতা রয়েছে বলে জানান তিনি। সিরাজগঞ্জ, ফুলবাড়িয়া, সাভারসহ দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা এ বাজারে আসেন বলে জানান তিনি।

Source link

Related posts

এসএসসির ফরম পূরণ স্থগিত, বাড়ছে সময়

News Desk

শ্বাসকষ্টে ভুগছেন খালেদা জিয়া

News Desk

ঝড়ো বাতাসে দৌলতদিয়া ঘাটে ১ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ, ভোগান্তি

News Desk

Leave a Comment