বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুরোধে নগরীর বর্জ্য অপসারণ ও পরিবহন কার্যক্রম শুরু করেছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। সিটি মেয়রসহ কয়েকজন কাউন্সিলর ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে নগরীর বর্জ্য অপসারণের কাজ বন্ধ রাখেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এতে নগরীর বিভিন্ন এলাকার সড়কের পাশে বর্জ্যের স্তূপ তৈরি হয়। দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে শনিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যার পর নগরীর কালীবাড়ি রোডের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন সাদিক আব্দুল্লাহ। এ সময় তিনি সাধারণ জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানান। এরপর নগরীর বর্জ্য অপসারণ ও পরিবহন কার্যক্রম শুরু করেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন শাখার পরিদর্শক আবুল কালাম রানা জানান, সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ কয়েকজন কাউন্সিলর ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বর্জ্য অপসারণ ও পরিবহন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। শনিবার দুপুরে নগরীর টাউন হলের সামনে বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন থেকে মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজে ফিরবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ রাতে সংবাদ সম্মেলন করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করেন। এরপর পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজে নেমে পড়েছেন।
পরিদর্শক আবুল কালাম রানা বলেন, আশা করছি, রাতের মধ্যেই নগরীর সব জায়গার বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে আগের মতো আমরা বরিশাল নগরীকে পরিচ্ছন্ন নগরীতে ফিরিয়ে আনবো।
উল্লেখ, বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে লাগানো ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসায় কয়েক দফা হামলা চালানো হয়। হামলাকারীদের রুখতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনসার সদস্যদের রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়তে হয়। প্রতিবাদে বুধবার মধ্যরাত থেকে বরিশালে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ অচল করে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজ বন্ধ রাখেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এরপর মেয়রের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে নৌ-যান ও বাস চলাচল শুরু হয়। অন্যদিকে হামলার ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়। দুটিতেই বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মীদের মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এদিকে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে নগরীর সড়ক ও বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য অপসারণ ও পরিবহন কার্যক্রম বন্ধ রাখেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। এতে নগরীর বিভিন্ন অলিগলি, কাঁচা বাজারের পাশে জমে থাকা ময়লার স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। এতে করে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা দেখা দেয়।