এবারও সীমান্তে হলো না দুই বাংলার মিলনমেলা
বাংলাদেশ

এবারও সীমান্তে হলো না দুই বাংলার মিলনমেলা

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবারও পহেলা বৈশাখে পঞ্চগড়ের চারটি সীমান্তে হয়নি বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের মিলনমেলা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ যৌথভাবে সীমান্তে এই মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে চার বার একই কারণে বন্ধ থাকছে এই আয়োজন।

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে পঞ্চগড়ের অমরখানা, শুকানি, মাগুরমারি ও ভূতিপুকুর সীমান্তে দুই বাংলার নাগরিকদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই মিলনমেলা জমে উঠে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ২০১৯ সাল থেকে এসব সীমান্তে মেলা হচ্ছে না। মিলনমেলার উদ্দেশে আসা অধিকাংশ মানুষের পাসপোর্ট ভিসা করা সম্ভব হয় না। দূর দূরান্ত থেকে আসা মানুষেরা অনেকেই আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কয়েক মূহুর্ত দেখা করতে এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁক গলিয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতেন, ভাব মিনিময় করতেন। মানুষ আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে এলেও মন খারাপ করে ফিরে যেতে হয়েছে তাদের।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) মিলনমেলা না হলেও অনেক লোকজন বিভিন্ন যানবাহনে করে এসেছিলেন সীমান্ত এলাকায়।

নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার কৈমারী থেকে মাইক্রোবাসে করে এসেছিলেন একদল মানুষ। তাদের মধ্যে দীপঙ্কর রায় জানান, তিন বছর পর ভারতের জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে অবস্থানরত আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখা হবে। এই আশায় অমরখানা সীমান্তে এসেছিলাম। অনেকদিন দেখা না হওয়া স্বজনদের জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে এসেছিলাম। দেখা না হওয়ায় এসব ফেরত নিয়ে যেতে হচ্ছে। সীমান্তে এসে মিলন মেলা হবে না জানতে পেরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বিফল মনোরথে বাড়ি ফিরেছেন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান বিজিবি ও প্রশাসন মিলনমেলা না হওয়ার বিষয়টি আমাদের আগেই জানিয়েছেন। এ কারণে আমরা স্থানীয়ভাবে মাইকিং করেছি। তারপরও চার তিন বছর পর মিলনের আশায় বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ যানবাহন নিয়ে সীমান্তে এসে ভিড় করছে।

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল গোলাম ফজলে রাব্বী জানান, করোনার কারণে বিএসএফ এবারও মিলন মেলা হবে না মর্মে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। মিলন মেলা হচ্ছে না এ বিষয়টি আগেই স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্তির পর অনেকের আত্মীয়-স্বজন উভয় দেশে থেকে যায়। ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করায় অনেকেরই যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। পাসপোর্ট করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভারত বা বাংলাদেশে যাতায়াত করে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা স্বাক্ষাৎ করা ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই দুই বাংলার মানুষ এই বিশেষ দিনটিতে স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান।

Source link

Related posts

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে এক ঘণ্টা আগে স্থগিত কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা, বিক্ষোভ

News Desk

স্বামীর নির্যাতনে ঘরছাড়া গৃহবধূকে শ্বশুরবাড়ি তুলে দিল পুলিশ

News Desk

মালয়েশিয়ায় আটক প্রবাসীদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা হবে

News Desk

Leave a Comment