এক সড়কে লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ
বাংলাদেশ

এক সড়কে লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রুদ্রগ্রাম-নবীগঞ্জ সড়ক। এটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গে নবীগঞ্জ শহরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। সড়কটির ১০ কিলোমিটার অংশজুড়ে বেহাল দশা। অধিকাংশ স্থান খানাখন্দ আর বড় গর্তে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে যায় পানি। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারী, যাত্রীসাধারণসহ পরিবহন চালকরা।

সরেজমিন দেখা যায়, হওয়ায় পানিউমদা, গজনাইপুর, দেবপাড়া ও বাউসা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের মাধ্যম এ সড়ক। এই সড়ক দিয়ে শাহ তাজ উদ্দিন কুরেশী (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয়, ধুলচাতল তাজিয়া মোবাশ্বীরিয়া আলিম মাদ্রাসা, দিনারপুর কলেজ, দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দিনারপুর দাখিল মাদ্রাসা, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বহু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সরকারি চাকরীজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনকে চলাচল করতে হয়। একমাত্র বাইপাস সড়ক হওয়ায় ট্রাক, ট্রাক্টর, অটোভ্যান, ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস প্রতিনিয়ত চলাচল করতো। কিন্তু সড়কের বেহাল দশায় যান চলাচল কমে গেছে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সড়কটির সংস্কার কাজে সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয় হলেও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে তা কাজে আসেনি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তারা দ্রুত টেকসই সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

সড়কটি ঠিকভাবে সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে কোথাও কোথাও পাকার চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম ১০ কিলোমিটার সড়কের আইনগাঁও, ভরপুর, চৌধুরী বাজার, বাউসা বাজার, বাউসা পয়েন্ট, বাউসা মাদ্রাসা পয়েন্ট, নাদামপুর মাদ্রাসা পয়েন্ট, রিফাতপুর, শিবপাশাসহ প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কজুড়ে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একেকটা গর্ত যেন মরণফাঁদ। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার খানা-খন্দ পানিতে ভরে যায়। কাদামাটি-পানি অতিক্রম করে যান চলাচল করছে। লাখো মানুষকে নানান প্রতিকূলতা আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এ সড়কে।

নবীগঞ্জের বাশডর গ্রামের মুসা তালুকদার বলেন, ‘নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কের বেহাল অবস্থা। একদিন নবীগঞ্জ গেলে বাড়িতে এতে ব্যথার ওষুধ খেতে হয়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা হলে জনসাধারণ অনেক উপকৃত হবে।’

একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী মোশারফ আলী মিঠু বলেন, ‘বিভিন্ন কাজে উপজেলা সদরে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়ক হয়ে যেতে হয়। বৃষ্টি হলে সড়কটির বড় বড় গর্তে পানি জমে যাওয়ায় মানুষের খুবই দুর্ভোগ হয়। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় সড়ক সংস্কারের একমাস পর থেকে ভাঙতে শুরু করে। এখন একেকটা ভাঙন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।’

সিএনজি অটোরিকশা চালক আকলু মিয়া জানান, সড়কটি পুরোপুরি ভেঙে গেছে। কেউই সংস্কার করার উদ্যোগ নিচ্ছেন না। ভাঙা সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে কয়েকদিন পরপর অটোরিকশা নষ্ট হয়ে যায়। দ্রুত সংস্কার হলে আমরা উপকৃত হবো।’

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের প্রকৌশলী জোনাইদ আলম বলেন, ‘৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়ক সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ঢাকায় প্রাক্কলন অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুত কাজ শুরু হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের শেষের দিকে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়ক ৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ করে হবিগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসান বিল্ডার্স। নির্মাণের একমাসের মাথায় সড়কটি ভেঙে যায়।

Source link

Related posts

রংপুরে ১৫ মিনিটের বিক্ষোভ করেছে বিএনপি-জামায়াত

News Desk

অনুমোদন পেতে যাচ্ছে গ্লোব বায়োটেকের করোনা ভ্যাকসিন

News Desk

দৌলতদিয়ায় বিপৎসীমার ওপরে পদ্মার পানি

News Desk

Leave a Comment