ঋণ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও
বাংলাদেশ

ঋণ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও

ঋণ দেওয়ার কথা বলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রায় ৪০০ গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে উধাও হয়েছে এমপিএল রিসোর্স ইনস্টিটিউট নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। ওই এলাকার গৃহকর্মী, রিকশাচালক ও মেঘনার জেলেসহ দরিদ্র গ্রাহকের কাছ থেকে এ টাকা সংগ্রহ করা হয়। টাকা ফেরতের দাবিতে সোমবার (৩ জুন) দুপুরে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট বাজারের পাশে প্রবাসী আতিক উল্লাহর ভবনে তালা দিয়েছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।

ঢাকার মতিঝিলে এমপিএল রিসোর্স ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয়। এর রেজিস্ট্রেশন নম্বর (০১৮০৫৬ ও কোড নাম্বার-১৬৮)। গত এক মাস রায়পুরের উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে অস্থায়ী কার্যালয় খুলে গ্রাহক জোগাড় করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

গ্রাহকরা জানান, এই সংস্থার প্রায় ৪০০ গ্রাহক রয়েছে। সংস্থাটি প্রতি বই বাবদ ১৫, ২০, ২৫ ও ৩০ হাজার টাকা সঞ্চয় রাখা এক থেকে চার লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

জেলে বাবুল মাঝি বলেন, সোমবার (৩ জুন) আমাদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল।  দুপুর ২টায় খাসেরহাট বাজারের পাশে ওই অফিসে এসে দেখি, অফিসে কেউ নেই। তালা ঝুলছে। সঞ্চয় দেওয়ার নামে ১৫, ২০, ৩০, ৩৫ হাজার টাকা করে নিয়েছে। বহু কষ্ট করে নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাই। ভাবলাম, সমিতিতে টাকা রেখে ঋণ নিয়ে একটা দোকান দিয়ে বসবো। এখন আমাদের টাকা নিয়ে সমিতি পালিয়েছে। আমাদের টাকা ফেরত চাই এবং প্রতারকদের বিচার চাই।

গৃহকর্মী নাজমা বেগম বলেন, জুন মাসের শেষে আমার স্বামী বিদেশ যাবে। এ জন্য ৩৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে চার লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন অফিসে এসে দেখি, তারা আমার ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়েছে। এখন মানুষের কাছ থেকে ধার নেওয়া ৩৫ হাজার টাকা পরিশোধ করবো কীভাবে ও স্বামী বিদেশ যাবে কীভাবে? আমার কী করবো?

নাজমা, মমতাজ, মারিফা, জাকিয়া, বাকের মাঝি ও বাবুল মাঝির মতো পুরো উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকার এসব দরিদ্র মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে এমপিএল রিসোর্স ইনস্টিটিউট। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে  থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

কার্যালয়ের জন্য সংস্থাটি খাসেরহাট বাজারের মসজিদের পেছনের সৌদি প্রবাসী আতিকের ভবনে ঘর ভাড়া নেয়। মালিকের ভাই সৌরভ বলেন, কোম্পানির কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে আট হাজার টাকা মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিই। তারা গত এক মাস আগে বাসা ভাড়া নেয়। কিন্তু এভাবে তালা মেরে পালিয়ে যাবে জানা ছিল না। রায়পুর থানা পুলিশ আমাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সংস্থার উপজেলা ম্যানেজার হাবিবুর রহমানের মোবাইল নম্বরে  (০১৮১৪২৬৩১৭৩) একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম কিছুই জানেন না বলে জানান।

রায়পুর থানার ওসি ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, এ ঘটনা জানতে পেরে তাৎক্ষণিক দুই এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে গ্রাহকদের সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে। তারা যদি মামলা করেন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খান বলেন, এ বিষয়ে কেউ জানাননি। এনজিও সভায় সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হবে। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Source link

Related posts

এবার গদখালিতে ফুটেছে টিউলিপ, পিস ১২০ টাকা

News Desk

গণতন্ত্র না থাকায় ভেঙে পড়েছে বিএনপি

News Desk

শীতবস্ত্র পেয়ে খুশি সুবিধাবঞ্চিত স্কুলের শিক্ষার্থীরা

News Desk

Leave a Comment