ঈদ আনন্দ বাজারে ২ টাকায় ব্যাগভর্তি সদাই পেলো ৪০০ পরিবার
বাংলাদেশ

ঈদ আনন্দ বাজারে ২ টাকায় ব্যাগভর্তি সদাই পেলো ৪০০ পরিবার

অকালে স্বামী হারিয়েছেন প্রতিবন্ধী রোজিনা আক্তার (৫০)। কিশোরগঞ্জ শহরের তারাপাশায় ছোটবোন রোকেয়ার কাছে থাকেন। টুকটাক কাজকর্ম করে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে না দুই বোনের সংসার। ধারদেনা করতে হয়। এ অবস্থায় ঈদ চলে এলেও কেনাকাটা, বাজার-সদাই কিছুই করা হয়নি তাদের।

হতদরিদ্র এই দুই নারীকে সোমবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে আমন্ত্রণ জানানো হয় দুই টাকার ঈদ আনন্দ বাজারে। সেখান থেকে তারা দুই টাকার বিনিময়ে ব্যাগভর্তি ঈদের বাজার-সদাই পেয়েছেন। এতে রয়েছে দুই ধরনের চাল, তেল, দুধ, সেমাই, লবণ, চিনি ও নতুন শাড়ি-লুঙ্গিসহ ১১ প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। ঈদসহ অন্তত এক সপ্তাহের খাবার পেয়ে তাদের মলিন মুখে হাসি ফুটেছে।

রোজিনা ও রোকেয়ার মতো যারা উচ্চমূল্যের বাজারে ঈদের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো কিনতে পারছিলেন না, ঈদের দিন কীভাবে কাটবে তাদের, সে চিন্তা থেকে বাজারের আয়োজন করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী এনায়েত করিম অমি দুই টাকার বাজারের উদ্যোক্তা। এতে সহযোগিতা দিয়েছে আব্দুল করিম ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরের নগুয়ার বিন্নগাঁও এলাকায় তার বাসার সামনে খোলা জায়গায় ব্যতিক্রমধর্মী এই বাজার বসানো হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুরুতেই লোকজন বাজারের সামনে টেবিলে গিয়ে দুই টাকা করে পরিশোধ করছেন। পরে তাদের হাতে একটি করে ব্যাগ ধরিয়ে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। এরপর তাদের মূল বাজারে প্রবেশের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। সবাই নিজ হাতে বিভিন্ন টেবিলে সাজানো পণ্যগুলো ব্যাগে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলে বাজারের কার্যক্রম।

শহরতলীর চংশোলাকিয়া গ্রামের হাদিস মিয়া বলেন, ‘দুই টাকায় এখন কিছুই পাওয়া যায় না। কিন্তু আজ দুই টাকার বাজার থেকে ব্যাগভর্তি সদাই পেয়েছি। এতে অনেক খুশি হয়েছি। ঈদে খুব উপকার হলো।’

আয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রথমে স্বেচ্ছাসেবকরা শহরের বিভিন্ন এলাকার দরিদ্রদের বাছাই করেছেন। পরে তাদের হাতে দুই টাকার বাজারের আমন্ত্রণপত্র তুলে দেওয়া হয়। যারা আমন্ত্রণ পেয়েছেন, সবাই বাজারে এসে পণ্য কিনেছেন। আনন্দঘন পরিবেশে চলেছে কার্যক্রম। ৪০০ নারী-পুরুষ বাজার করতে পেরেছেন।

বাজারের আয়োজক এনায়েত করিম অমি বলেন, ‘উচ্চমূল্যের বাজারে অনেক গরিব পরিবার ঈদের প্রয়োজনীয় বাজার করতে পারেনি। তাদের কথা ভেবে দুই টাকার বাজারের আয়োজন করেছি। এটি দানের কোনও বাজার নয়, লোকজন জিনিসপত্র এখান থেকে কিনে নিয়েছেন। আমার আহ্বান থাকবে এ ধরনের উদ্যোগ যেন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে, সামর্থ্যবানরা যদি জনকল্যাণমূলক কাজে এগিয়ে আসেন তাহলে দেশের দরিদ্র লোকজন স্বস্তি পাবেন।’  

তিনি বলেন, ‘বাজারে প্রত্যেক পরিবারের জন্য এক কেজি পোলাওয়ের চাল, তিন কেজি সেদ্ধ চাল, এক প্যাকেট সেমাই, এক কেজি চিনি, আধা লিটার সয়াবিন তেল, এক কেজি ডাল, এক প্যাকেট লবণ, এক প্যাকেট দুধ, একটি সাবান, একটি শ্যাম্পু ও নারীদের জন্য নতুন শাড়ি আর পুরুষের জন্য একটি করে লুঙ্গি রাখা হয়।’

Source link

Related posts

বান্দরবানে উঁচু স্থানের পানি কমলেও এখনও ডুবে আছে নিচু এলাকা

News Desk

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর-জমি ফেরত দিলেন দিনমজুর 

News Desk

সাংবাদিকদের স্বার্থবিরোধী কোনো কিছুই করবে না সরকার: ওবায়দুল কাদের

News Desk

Leave a Comment