আশা নিয়ে হিলি সীমান্তে এসেছিলেন তারা, দেখা হলো না
বাংলাদেশ

আশা নিয়ে হিলি সীমান্তে এসেছিলেন তারা, দেখা হলো না

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে দুই দেশের দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। সীমান্তের বাংলাদেশ ও ভারত অংশে ভিড় করেন তারা। কেউ এসেছেন পূজা দেখতে, আবার কেউবা এসেছেন অপর পাশে থাকা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের কঠোর মনোভাবের কারণে দূর থেকে হাত নেড়ে মনের ভাব প্রকাশ করে কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাদের।

জয়পুরহাট থেকে আসা তৃপ্তি রানী বলেন, ‘আমার বোন-ভাগনি থাকে ভারতে। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর তাদের সঙ্গে আমাদের দেখা-সাক্ষাৎ নেই। আমার পাসপোর্ট নেই যে ভারতে গিয়ে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবো। তেমনি ওদেরও পাসপোর্ট নেই বলে আসতে পারে না। পূজার সময় নাকি দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেয়, সে কারণেই আজ হিলি সীমান্তে এসেছি। কিন্তু ওদের সঙ্গে দেখা করা ও কথা বলা সম্ভব হচ্ছিল না। বিজিবি কাছে যেতেই দিচ্ছিল না। বলছে অনুমতি নেই। আমরা যেমন সীমান্তের কাছে দাঁড়িয়ে আছি, তেমনি ভারতে থাকা আত্মীয়-স্বজনও এসে সীমান্তের ওপারে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থেকে আসা অনিল কুমার বলেন, ‘শুনেছিলাম পূজায় একদিনের জন্য সীমান্ত নাকি খুলে দেওয়া হয় মানুষ পারাপারের জন্য। সেই কথা লোকমুখে শুনে পরিবার নিয়ে হিলি সীমান্তে এসেছি, ভারতে গিয়ে পূজা দেখবো বলে। কিন্তু এসে দেখি খুলে দেওয়া তো দূরে থাক, সীমান্তের কাছাকাছি বিজিবি আমাদের যেতেই দিচ্ছে না। আমাদের লোকজন ওপারে এসে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের সঙ্গে যে একটু দেখা করবো, কথা বলবো, সেই সুযোগ নেই। বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছি।’

সীমান্তে আসা টুম্পা সাহা বলেন, ‘আমরা হিলি সীমান্তে এসেছি ভারতীয় প্রতিমা দেখার জন্য। সেই সঙ্গে ভারতে আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। তাদের সঙ্গে দেখা হবে, এই আশা করে এখানে এসেছি। কিন্তু বিজিবি আগেই আটকে দিচ্ছে। স্বজনদের সঙ্গে দূর থেকে হাত নেড়ে ইশারার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করে কষ্ট নিয়েই বাড়ি ফিরছি।’

কেউ এসেছেন পূজা দেখতে, আবার কেউবা এসেছেন অপর পাশে থাকা স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে সীমান্তে আসা পলাশ বসাক বলেন, ‘এলাকার অনেক প্রতিমাই দেখেছি, কিন্তু ভারতীয় প্রতিমা কেমন সেটি দেখতেই আমরা হিলিতে এসেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা ওপারে যেতে পারছি না।’

বিজিবির হিলি আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার অহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হিলি সীমান্তে ষষ্ঠী পূজার দিন থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। দিন যতই গড়াচ্ছে ততই দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। তবে অনুমতি না থাকায় সীমান্তের শূন্য রেখায় ওপারের স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা সীমান্তের রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে থেকেই ভারতে থাকা স্বজনকে চোখের দেখা দেখে ও ছবি তুলে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। বিশেষ বিবেচনায় দুএকজন ব্যক্তিকে সীমান্তের চেকপোস্ট গেটের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে ভারতে থাকা স্বজনের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।’

Source link

Related posts

শুরু হচ্ছে বাণিজ্য মেলা, শত কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা

News Desk

শরীয়তপুরে শুরু হলো ব্যতিক্রমী কোরবানির পশুর হাট

News Desk

সংস্কার হচ্ছে কালুরঘাট রেলসেতু, চলবে ফেরি

News Desk

Leave a Comment