আতঙ্ক আর ভয় কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির জীবনযাত্রা। শহরে সহিংসতার ঘটনার পর মঙ্গলবার বনরুপা সাপ্তাহিক বাজারে পাহাড়ি-বাঙালি ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক দিনের মতো।
বাজারে পাহাড়ি বিক্রেতা যেমন ছিল, তেমনি ছিল বাঙালি বিক্রেতাও। কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিল সব সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও কিছুটা আতঙ্ক রয়েছে কারও কারও মধ্যে।
শহরের দোকানপাট, অফিস, আদালতে মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সব রুটে যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর চান না বলে জানান স্থানীয় মানুষরা।
বনরুপা বাজারে সবজি বিক্রেতা মঙ্গল চাকমা বলেন, ‘গতকাল থেকে বনরুপা বাজারে লোকজন আসতে শুরু করেছে। গত কালের তুলনায় আজ পাহাড়ি-বাঙালি সবাই এসেছে। সবার মনে আতঙ্ক ছিল। সেটি আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে। দিন যত যাবে স্বাভাবিক হয়ে যাবে সব।’
আরেক ব্যবসায়ী শোভা রানী চাকমা বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও মনের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে, কখন আবার কী হয়। আমরা চাই দ্রুত সবকিছু ঠিক হয়ে যাক।’
বনরুপায় বাজারে বাজার করতে আসা সেলিম উল্লাহ বলেন, ‘আমরা এই বাজারে সব সম্প্রদায়ের মানুষ আসি। হঠাৎ শুক্রবার কী হয়ে গেলো! এমন পরিস্থিতি আর কখনও না হোক, এটাই চাই। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ, শান্তিতে পাহাড়ি-বাঙালি বসবাস করতে চাই। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক।’
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সহিংসতার ঘটনায় দুটি সরকারি অফিস, ৮৯টি দোকান, ৪টি ব্যাংক, ৮৫টি ভাসমান দোকান, দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ৪৬টি পরিবহন, দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং একটি পুলিশ বক্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক হিসাবে আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৯ কোটি টাকা।
জেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।