বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে না যাওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম ও র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। রবিবার (২৫ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কুমিল্লা জিলা স্কুল মাঠে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
জানা গেছে, বিকাল সোয়া ৩টার দিকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে হেলিকপ্টারযোগে কুমিল্লায় আসেন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ও র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান। হেলিকপ্টারে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অবতরণ করেন তারা। পরে কুমিল্লা জিলা স্কুলে বানভাসি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে যান। ত্রাণ বিতরণের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা হইচই শুরু করলে আইজিপি মঞ্চে না গিয়ে কয়েকজন বানভাসিকে ত্রাণ দিয়ে গাড়িতে উঠে যান। এরপর বেরিয়ে যাওয়ার পথে জিলা স্কুলের মূল ফটক বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, এখানে (কুমিল্লা জিলা স্কুল) কোনও বন্যার্ত ছিল না। ফটোসেশনের জন্যই এমন ত্রাণ বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে। আইজিপি ও র্যাব মহাপরিচালককে বন্যার কেন্দ্রস্থলে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের বলতে শোনা যায়, ‘আমরা এখানে আজকে তিন দিন যাবৎ কাজ করছি। একজন পুলিশও কি আসছে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে? এখানে আশ্রয় নেওয়া বাচ্চাগুলো চিকিৎসা পায় না। যাদের ত্রাণ দিতে এসেছেন, তারা কি বন্যার্ত? তাদের অনেককে জিজ্ঞেস করেছি, কেউ এসেছে নগরীর ধর্মপুর থেকে, কেউ এসেছে চর্থা থেকে। ওই দিকে কি বন্যা আছে?’ এ সময় তারা ত্রাণ বিতরণে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন যেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করে সেই দাবি জানান।
এ সময় আইজিপি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা দেশের জন্য অনেক কাজ করছেন। এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। ভালো সমন্বয় না হওয়ার কারণে এখানে ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। আমাদের পুলিশ-র্যাব প্রান্তিক জনপদে গিয়ে কাজ করছেন। আপনাদের যেকোনও ভালো উদ্যোগকে আমরা পেছন থেকে সহায়তা করবো।’ এ সময় কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) সাইদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমানও কথা বলেন।
পরে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার একটি পিকআপ ভ্যান পরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। এ ছাড়া ত্রাণসামগ্রী বিতরণে নৌকাসহ বিভিন্ন উপকরণ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।