Image default
বাংলাদেশ

অ্যাম্বুলেন্স ভোগান্তিতে কুয়াকাটার স্থানীয়রা

অ্যাম্বুলেন্স সেবার একটু সহানুভূতি কি আমরা কুয়াকাটার মানুষ পেতে পারি না , এমন প্রশ্ন থেকেই যায় সব সময়। গত কয়েক বছর ধরে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে একটি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য স্থানীয়রা সহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক সংগঠন গুলো দাবি জানিয়ে আসলে ও এখন পর্যন্ত এর কোন সুরাহ হয়নি আজ ও তাই স্থানীয় মানুষের ভিতর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।

পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটায় প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটকের সমাগম ঘটে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে। এর ভিতর সড়ক দুর্ঘটনা কিনবা কোন পর্যটক হঠাৎ অসুস্থ হলে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে দুরে কোথাও নেয়ার উপায় নেই কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে কোন অ্যাম্বুলেন্স না-থাকায় তাই ভোগান্তিতে পরতে হয় রোগীদের।

কুয়াকাটা পৌরসভা,লতাচাপলী ইউনিয়ন,মহিপুর থানা,ধুলস্বর,চর চাপলীর মানুষের জন্য নেই একটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স এর চেয়ে আর কি দুঃখ থাকতে পারে এ জনপদের মানুষের। হাসপাতালে ইমার্জেন্সি রোগী নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত উপজেলা,জেলা,কিনবা বিভাগীয় শহরের উন্নত মানের হাসপাতাল গুলোতে নেয়ার জন্য ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কারের দারস্থ হতে হয় ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনদের। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি কলাপাড়া উপজেলা শাখার,ভাইস প্রেসিডেন্ট,শফিকুল আলোম বলেন কুয়াকাটার স্থানীয় মানুষের জন্য উন্নত চিকিৎসা সেবায় অ্যাম্বুলেন্স জরুরী প্রয়োজন। দুর্যোগ পরবর্তী আহত মানুষদের জরুরী চিকিৎসা সেবায় একটি অ্যাম্বুলেন্স অত্যন্ত জরুরী।

কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দীন বিপ্লব বলেন,কুয়াকাটা দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যটন কেন্দ্র। এখানে বছরে প্রায় ২০ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটে। সেই সাথে স্থানীয় প্রায় আড়াই লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় একটি ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থাকলেও জরুরী চিকিৎসার জন্য তা যথেষ্ট নয়। যখন উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে দূরে পাঠাতে হয় তখন অ্যাম্বুলেন্স কতটা দরকার তা কেবল ভূক্তভোগী পরিবার গুলোই অনুধাবন করেন।

পর্যটক সেবাদান সংগঠন ট্যুর অপারেটরস্ এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) এর প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন,প্রতি বছর দেশি-বিদেশি পর্যটক আসে সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে তাই পর্যটকদের সেবার মান নিশ্চিত করতে হবে,এবং কোন পর্যটক হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য কোথাও পাঠাতে হলে অ্যাম্বুলেন্সের বিকল্প নেই কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকারি ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থাকলেও জরুরী প্রয়োজনে নেই একটি অ্যাম্বুলেন্স।

কুয়াকাটা (বিডি ক্লিন) সমন্বয়ক ডাঃ ইসমাইল ইমন (এমবিবিএস) রাশিয়া তিনি বলেন,কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট ১ টি হাসপাতাল আছে অথচ পর্যাপ্ত ডাক্তার কিংবা সেবিকা নেই। অনেক সময় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রোগীদের পটুয়াখালী কিংবা বরিশালে রেফার করা হয় তখনই রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয় ভাড়া করতে হয় উচ্চমূল্যে প্রাইভেট (রেন্ট-এ-কার) এমতাবস্থায় কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুলেন্স অতীব জরুরী। আশাকরি সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্তৃপক্ষ উক্ত বিষয়ে গুরুত্ব দিবেন।

সেচ্ছাসেবী সংগঠন কুয়াকাটা তরুণ ক্লাবের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা পর্যটকরা কিনবা স্থানীয় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তরিঘড়ি করে উন্নত চিকিৎসার জন্য দূরে নেওয়া সম্ভব হয় না। বাইরে থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স খবর দিয়ে আনতে কমপক্ষে ১ থেকে ২ ঘন্টা সময় লেগে যায়,যার ফলে বড় ধরনের দূর্ঘটনার শিকার হতে হয় কিন্তু এতো গুলো মানুষের জন্য একটা অ্যাম্বুলেন্স নেই এটা আমাদের জন্য খুবই কষ্ট দায়ক।

মানবিক সংগঠন কুয়াকাটা জন্মভূমি ক্লাবের সভাপতি কে.এম.বাচ্চু বলেন, কুয়াকাটার তুলাতলী ২০১২ইং সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল উদ্বোধন করেন। দীর্ঘ ৯ বছরের পার হলেও এখনো নেই একটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স,এতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লতাচাপলি ইউনিয়ন ও কুয়াকাটা পৌরসভা সহ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। এছাড়াও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কুয়াকাটা ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের প্রানের দাবি উন্নত চিকিৎসা সেবা পেতে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে একটি সরকারী অ্যাম্বুলেন্স খুবই জরুরী। কুয়াকাটার স্থানীয় মানুষ সহ সকল সামাজিক ও মানবিক সংগঠন গুলোর সময়ের দাবি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে সরকারি ভাবে যেন কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে একটি অ্যাম্বুলেন্সে দেয়া হয়। পর্যটন নগরী কুয়াকাটা সহ উপকূলীয় অসহায় মানুষ গুলোর কথা চিন্তা করে।

সূত্র : বরিশাল খবর ২৪

Related posts

সেন্টমার্টিন বাঁচাতে ১৩ সুপারিশের বাস্তবায়ন শুরু  

News Desk

কুড়িগ্রামে ৩ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ

News Desk

৩১ বছর পরও ভয়ে আঁতকে ওঠেন মাবিয়া

News Desk

Leave a Comment