Image default
আন্তর্জাতিক

ভারতের বিচ্ছিন্নতাকামীদের নিয়ে শরণার্থীদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হামলা

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমানায় মনিপুরি বিচ্ছিন্নতাকামী বিদ্রোহীদের নিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অধিনায়করা দেশটি থেকে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের ওপর হামলা করছে। ১ ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে মিয়ানমার থেকে যে সকল শরণার্থী ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

শনিবার ভারতের সংবাদ সংস্থা ইন্দো-এশিয়ান নিউজের (আইএএনএস) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সিনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে বলেন, স্থানীয় তাতমাদাও (মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংক্ষিপ্ত নাম) কমান্ডাররা ইউএনএলএফ ও পিএলএসহ মনিপুরি বিদ্রোহীদের সংগঠনগুলোর সাথে হামলার জন্য চুক্তি করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এটা মিয়ানমারের কোনো জাতীয় নীতি নয় কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডাররা মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন যাতে করে ভারতে মিয়ানমারের শরণার্থীদের প্রবেশ থামানো যায়। এ চুক্তির আওতায় ইউএনএলএফ ও পিএলএ-এর যে অংশের কার্যক্রম মিয়ানমারের সাগাইং প্রদেশ থেকে পরিচালিত হয়, তারা যে সকল শরণার্থী পায়ে হেটে ভারতের সীমান্তের দিকে যাবে তাদের আক্রমণ করবে। মনিপুরি বিচ্ছিন্নতাকামী বিদ্রোহীরা শরণার্থীদের ওপর এমনভাবে আক্রমণ করবে যাতে করে তারা আবার তাদের দেশ মিয়ানমারের নিজ গ্রামে ফিরে যান।

এর বিনিময়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এ বিচ্ছিন্নতাকামী বিদ্রোহীদের নিশ্চয়তা দিয়েছে যে সাগাইং প্রদেশে অবস্থিত ইউএনএলএফ ও পিএলএ-এর ঘাঁটিগুলোতে হামলা করা হবে না। বার্মার বিরোধী দলগুলো সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে বলেছেন, ইউএনএলএফ ও পিএলএ-এর বিদ্রোহীরা কমপক্ষে ১২ শরণার্থীকে হত্যা করেছে। গত একমাসে তামু অঞ্চলে তাদের আক্রমণে এ এ সকল শরণার্থী নিহত হয়, নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের চার সদস্যও রয়েছেন। এর আগে (সামরিক অভ্যুত্থানের আগে) মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ওই দেশের সাগাইং প্রদেশে অবস্থিত ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাকামীদের ঘাঁটিগুলোতে অভিযান চালিয়েছে। এ সময় মিয়ানমার ২২ মনিপুরি বিচ্ছিন্নতাকামীকে ভারতের হাতে তুলে দেয়।

অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে অন্তত তিন হাজার শরণার্থী ভারতের মিজোরাম ও মনিপুরে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে মিয়ানমারের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) তাদের রোববারের প্রতিবেদনে জানায়, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে অন্তত সাত শ’ ৩০ জন নিহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে বন্দী রয়েছে তিন হাজার এক শ’ ৫২ জন। এছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আরো ৮৭১ জনের নামে।

১ ফেব্রুয়ারি তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।

সূত্র : মুসলিম মিরর

Related posts

উত্তরপ্রদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩১

News Desk

রোমানিয়ার ইউক্রেন সীমান্তে ৫০০ সেনা পাঠাচ্ছে ফ্রান্স

News Desk

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত

News Desk

Leave a Comment