রানা প্লাজা ধসের ৯ বছরেও মেলেনি ক্ষতিপূরণ
বাংলাদেশ

রানা প্লাজা ধসের ৯ বছরেও মেলেনি ক্ষতিপূরণ

সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার নয় বছর পূর্ণ হচ্ছে রবিবার (২৩ এপ্রিল)। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলার বিচার এগোয়নি। এতগুলো প্রাণহানির ঘটনায় সোহেল রানারও বিচার হয়নি। আজও আহত ও নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের দেওয়া হয়নি ক্ষতিপূরণ। 

এ নিয়ে শনিবার বিকালে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন শ্রমিকনেতা, রানা প্লাজার আহত ও নিহতদের স্বজনরা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন ও রানা প্লাজা গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন গার্মেন্টসের শ্রমিকনেতার পাশাপাশি আহত শ্রমিকরা বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘নয় বছর পার হওয়ার পথে। অথচ এই ঘটনার মূলহোতা সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হয়নি। এখন পর্যন্ত হতাহত শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি ক্ষতিপূরণ। করা হয়নি চিকিৎসার ব্যবস্থা। এজন্য আজও এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছি আমরা। রানা প্লাজার জায়গা অধিগ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও পরিবারের পুনর্বাসন এবং ২৪ এপ্রিলকে শোক দিবস ঘোষণা করার দাবি জানাই।’ 

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘শুধুমাত্র রানা প্লাজা নয়, তাজরীন ফ্যাশন অগ্নিকাণ্ড, স্পেকট্রাম গার্মেন্টস ভবন ধসসহ এ পর্যন্ত দেশের যেসব গার্মেন্টেসে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি। তাই সোহেল রানাসহ সব অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই।’

সমাবেশে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘রানা প্লাজার ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের এখন পর্যন্ত বিচারের আওতায় আনা হয়নি। যখনই ২৪ এপ্রিল আসে বিচার নিয়ে কথা ওঠে। কিন্তু বছরের বাকি ১১ মাস এ নিয়ে কোনও কথা হয় না। শ্রম আইন সংশোধনের মাধ্যমে কারখানাগুলো নিরাপদ করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছিল। এরপর অ্যাকোর্ড, অ্যালায়েন্স এসেছে। কিন্তু কারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। এখনও বিভিন্ন কারখানায় ঘটছে দুর্ঘটনা। শ্রমিকরা জীবন দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এখনও রানা প্লাজার যেসব শ্রমিক জীবিত আছেন তারা এই দিনে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আসতে চাইলে কারখানার মালিকরা ছুটি দেন না। সরকার ও কারখানার মালিকরা এই দিন ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমরা এ ঘটনার বিচার চাই এবং চাইবো।’

রানা প্লাজার আহত শ্রমিক নিলুফা আক্তার বলেন, ‘আমি ক্ষতিপূরণ চাই। আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। পাশাপাশি রানার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন।’

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৬ শ্রমিকের করুণ মৃত্যু হয়। আহত হন আরও কয়েক হাজার শ্রমিক। 

শ্রমিকরা জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে অবস্থিত রানা প্লাজায় তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা প্রতিদিনের মতো ওই দিন সকাল ৮টায় হাজির হন কর্মস্থলে। উৎপাদনও শুরু করেন নির্ধারিত সময়ে। হঠাৎ সাড়ে ৯টার দিকে বিকট শব্দ। আশপাশে উড়তে থাকে ধুলাবালু। ধসে পড়ে রানা প্লাজা। শুরু হয় আহত শ্রমিকদের আহাজারি। উদ্ধারে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। চলে বিরতিহীন উদ্ধার অভিযান।

Source link

Related posts

বড় সাজ্জাদের প্রশ্রয়ে অপরাধ জগতে ছোট সাজ্জাদ: সিএমপি কমিশনার

News Desk

বাংলাদেশ-ইইউ সংলাপ : যৌথ বিবৃতির অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হোক

News Desk

সাবেক এমপিদের ৫ ল্যান্ড ক্রুজার কিনতে চায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

News Desk

Leave a Comment