কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। এটাই অর্থনীতির চিরাচরিত ধারণা। কিন্তু কপি বুক বোধ হয় সব সময় অন্ধের মতো অনুসরণ করা যায় না। বাস্তবতা বুঝে করতে হয়। বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর নীতি সুদহার বৃদ্ধির হিড়িকের পরিপ্রেক্ষিতে যে মন্দার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে এমন কথা বলছেন বিশ্লেষকেরা।

বিষয়টি হলো, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী অর্থনীতির ততোধিক প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার বাড়িয়ে চলেছে। কিন্তু বিশ্বায়নের যুগে তার প্রভাব শুধু সে দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, সেই প্রভাব গড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের প্রায় সর্বত্র।

ফেডের অনুসরণে অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে এবং অনিয়ন্ত্রিত ডলারের প্রভাবে অন্যান্য দেশের মুদ্রার অবনমন—এটাই এখন বাস্তবতা। ফলে অনেকেই বলছেন, এখন যে বিশ্বজুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে, তা মূলত ডলারবাহিত মূল্যস্ফীতি।

ফেডের প্রভাব অন্যান্য দেশেও পড়ছে। কারণ, তারা যদি ফেডের পেছনে পড়ে যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা তাদের দেশ থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিতে পারে আর তাতে মহাবিপদ। সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন ডলার সে দেশেই জমা রাখা লাভজনক, নিরাপদ।

ফলে ভারতের মতো বাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার ঢল পড়েছে। ফেডের অনুসরণে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, নরওয়ে, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, তাইওয়ান, নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, ভারত ও বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারসহ এ বছর সব মিলিয়ে তিনবার নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেছে।

ফেডারেল রিজার্ভের এ নীতি সুদহার বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় সুফল হলো ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া। প্রভাবশালী মুদ্রাগুলোর মধ্যে ডলারের বিনিময় মূল্য এখন গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এতে মার্কিন নাগরিকদের সুবিধা হলেও অনেক দেশের অবস্থা তথৈবচ। আমদানি মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ, ভারতসহ অনেক উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশ বিপাকে পড়েছে।

Related posts

২৪ ঘণ্টায় আরও ৩০৪ জনের করোনা শনাক্ত

News Desk

কম পুঁজিতে ১০টি লাভজনক নতুন ব্যবসার আইডিয়া

News Desk

পুতিনের প্রস্তাবে রাজি হলেন এরদোগান

News Desk

Leave a Comment